হস্তিনী জাতীয় নারী:
হস্তিনী জাতীয় নারী সর্ব নিকৃষ্ট। এদের দেহের গঠন কদর্য এবং দেহ অত্যন্ত মোটা হয়ে থাকে। মাথা গড়, চুল খুব ছোট ও পাতলা, চোখ ছোট এবং কোটরাগত। নাক বেশী মোটা, দাঁতগুলি চওড়া এবং বড়। মুখের গঠন সৌন্দর্যহীন। অবশ্য তাহাতে হাদি লাগিয়াই থাকে। গলা মোটা, বুক প্রসন্ত, জনের গঠন অসুন্দর। গয়ের চামড়া খসখসে। অসুন্দর। শরীরে পুরুষের মত লোম আছে। এয়া হাটার সময় শব্দ করে হাটে। মুখের ভাষা খুব কর্কশ।
এই জাতীয় নারীদের অন্তর সব সময় অসৎ চিন্তায় ভরপুর থাকে। মানুষের প্রতি দয়া মায়া নাই। অপরের সাথে ঝগড়া কলহ বেঁধেই থাকে। অনেক সময় রুক্ষ ব্যবহার দ্বারা স্বামীকে অতিষ্ঠ করে তোলে।
এণের কাম-বাসনা ও যৌন উত্তেজনা অতিশয় প্রবল। সব সময় পরপুরুষের শয্যাভিলাসী হয়ে থাকে। একমাত্র স্বামীতে তারা তুষ্ট' নয়। নিত্য নতুন পুরুষের সাথে মিলনে এরা আগ্রহী। কোন শশক বা মৃগ শ্রেণীর পুরুষের সাথে এদের বিবাহ হলে অশান্তির আগুনে পুড়তে থাকে। হস্তিনী নারীগণ বেশী পানাহার করে। এদের ঘুম অনেক বেশী। এরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে মোটেও খোয়াল রাখেনা। এরা অত্যন্ত অলস ও অকর্মন্য প্রকৃতির হয়ে থাকে। ধর্মের প্রতি এদের আকর্ষণ মোটেও নাই। হস্তিনী জাতীয় নারীদের বিবাহ অশ্ব জাতীয় পুরুষের সাথে হলে তাহাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হয়।
নারী-পুরুষ উভয়ে যৌবনে আগমণ:
মহান আল্লাহ তা'আলার সৃষ্টির সেরা হলো মানুষ জাতি। মানুষের পূর্ণ জীবনে চারটি স্তর আছে।
১. শৈশব,
২. কৈশর,
৩. যৌবন,
৪. বৃদ্ধকাল।
এর মধ্যে যৌবনকাল ভাগ বা
• হল সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মহান আল্লাহ তা'আলার সৃষ্টি সম্পর্কে মানুষের কোন ধারণা নাই। অণু-পরমাণুর মত দীর্জ হতে মানুষ সৃষ্টি করে বংশানুক্রমে কোটি কোটি মানব সৃষ্টি করে ওঁর সৃষ্টি মহিমা প্রকাশ করিয়াছেন। শিশুকালে ছেলে-মেয়েরা শুধু পানাহার ব্যতীত আর কোন কিছুর প্রয়োজন অনুভব করে না। শৈশবকাল শেষ হওয়ার সাথে সাথে কৈশরের আবির্ভাব ঘটে এবং বয়স বৃদ্ধি পাওয়ার সংগে সংগে কৈশরের আবির্ভাব ঘটে। এবং বয়স বৃদ্ধি পাওয়ার সংগে সংগে যৌবনে পদার্পণ করে। তখন তাহারা দুনিয়ার অনেক জিনিসের সাথে পরিচিত হয়। তখন হতে তাদের নিজ নিজ জীবনের পরিবর্তনের ধারনাটা অনুভব করতে পারে। এই অবস্থায় ছেলে মেয়েদের দেহের প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বর্ধিত হয়ে যৌবনের রেখা পরিস্ফুটিত হতে থাকে। তখন ছেলেদের মুখে দাড়ি-গোফ এবং নাভির নিচের পশম গজাইতে আরম্ভ করে। মাঝে মাঝে স্বপ্নদোষ হতে পারে। মেয়েদের স্পর্শে পুলক অনুভব করে। আর এই অবস্থায় মেয়েদের বুকের উপর স্তনদ্বয় বড় হতে থাকে। নাভির নিচের পশম গজাইতে থাকে। প্রতি মাসে হায়েয হতে থাকে। এমনকি পুরুষের স্পর্শ পেলে মেয়েরাও পুলক অনুভব করতে থাকে। এই অবস্থায় যুবক-যুবতীরা মনের আনন্দে, সুখের নেশায়, রঙিন ভবিষ্যতের আরাম আয়েশের জন্যে মনে মনে বিভিন্ন প্রকারের কল্পনার জাল বুনতে থাকে। যৌবন আরম্ভ হওয়ার প্রাক্কালেই যুবক যুবতীদের মনের মধ্যে কামরিপুর স্পৃহা জেগে ইন্দ্রিয়ের তাড়নায় কামলিন্দা চরিতার্থ করার জন্য যুবক যুবতীর সান্নিধ্য এবং যুবতী যুবকের সান্নিধ্য কামনা করতে থাকে। এই বয়সে যুবক যুবতীরা যৌন আলাপ আলোচনা করা, অশ্লীল বই পুস্তক নাঠ করা, সিনেমা দেখতে গিয়ে দূরুচিপূর্ণ অয়াল ছান দেখে মনের জন্যে এক স আনন্দ লাভ করতে থাকে। যৌবনে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পেয়ে কাম-বাসনার উদ্রেগ হয়ে কুমতলব প্রবল আকার ধারণ করে যুবক-যুবতীদের অন্তরকে অতিষ্ট করে তোলে। এই অবস্থায় অনেক যুবক যুবতী কাম পিপাসায় উন্মত্ত হয়ে লোক লজ্জার ভয়। অথ করে আন হারা হয়ে জ্বিনার কাজে লিজ হয়ে যায়। অনেকে আবার মাস্তানী করে, নারীকে অপহরণ করে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এই খারাপ দিকে যুবক যুবতীরা ধাবিত হলে সমাজ বাসস্থা ভেঙ্গে পড়ে। যুবক যুবতীদের এই সময়ে পথভ্রষ্ট হওয়ার একমাত্র কারণ হলো ছুশিক্ষা, কুসংগে চলাফেরা করা । ছোট বেলায় পিতামাতা যদি তাদের সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা তথ্য সুশিক্ষা দিত, সৎ সঙ্গে চলাফের। করার জন্য নির্দেশ দিত তবে সেই সমস্ত সন্তান যৌবনে উপনীত হয়ে পথভ্রষ্ট হবে না। আর যদি ছোট বেলা হতে সন্তানকে অসৎ সঙ্গে চলাফেরা ও কুশিক্ষালাভের সুযোগ করে দেয়, তবে তাহারা কখনও সৎ ও চরিত্রবান হবে না।
যৌন কামনা-বাসনা চরিতার্থ করার জন্য নারী-পুরুষের দাম্পত্য জীবনকে পুরাপুরি শান্তিময় ও মধুময় করার জন্যে আল্লাহ পাক বিবাহের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এতে বৈধভাবে নারী পুরুষ যৌন স্বাদ অনুভব করতে পারবে। নারী পুরুষের বৈধভাবে মিলনের একমাত্র পথ হলো ইসলামী মতে বিয়ের ব্যবস্থা করা। বিবাহ ছাড়া নারী পুরুষ মিলিত হয়ে যৌন স্বাদ অনুভব করলে উহ্য সম্পূর্ণভাবে হারাম বা নিষিদ্ধ কাজ হবে এবং পরকালে উহার জন্যে আল্লাহ পাক শাস্তি নির্ধারণ করে রেখেছেন।
নর-নারীর মাঝে প্রেম-ভালবাসা:
পরম করুণাময় আল্লাহ তা'আলার সৃষ্ট মানুষের মধ্যে প্রেম-ভালবাসা এক অপূর্ণ নিয়ামত। মানুষকে সৃষ্টিই করা হয়েছে প্রেমের দ্বারা। সৃষ্টির প্রথম মানুষ আদম (আঃ)-এর প্রেম-ভালবাসার নিদর্শন য হল হযরত হাওয়া (আঃ)। তাঁরা দু'জনই প্রেম ভালবাসায় মুগ্ধ হয়ে অনেক দিন পর্যন্ত বেহেশতে অবস্থান করেছেন। মহান আল্লাহ তা'আলা হযরত আদম এবং হযরত হাওয়া (আঃ)-এর মাঝে যে প্রেম-ভালবাসা সৃষ্টি করেছেন, তাই এই পৃথিবীর মানুষের মাঝে ক্রমান্বয়ে পৌঁছে যায়। আল্লাহ তা'আলার সৃষ্টির প্রতিটি প্রাণীর ভিতরই প্রেম-ভালবাসা আছে। আর এই প্রেম-ভালবাসার জন্যেই একজন আরেকজনকে ভালবাসে। সৃষ্টির মাঝে পরম করুণাময় আল্লাহ তা'আলা যদি প্রেম-ভালবাসা সৃষ্টি না করিতেন তাহলে সৃষ্টি অনেক আগেই ধ্বংস হইয়া যাইত। প্রেম ভালবাসার জন্য সৃষ্টি দুনিয়ার শৃঙ্খলা রক্ষা করে চলে। প্রেম ভালবাসার কারণেই পৃথিবী কত ছোট হয়ে গেছে। এই প্রেম-ভালবাসার জন্যেই পৃথিবীর এক প্রান্তের মানুষ অন্য প্রান্তের মানুষ মানুষ সাহায্য-সহযোগীতা করিয়া থাকে।আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলিয়াছেন, আল্লাহ তা'আলা তাঁর প্রেম ও রহমতকে একশত ভাগ করে তাহার একভাগ সকল সৃষ্টিকে দিয়েছেন।
যার কারণেসন্তান পিতামাতাকে ভালবাসে থাকে। সন্তানরা পিতামাতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে থাকে। স্বামী তার স্ত্রীকে গভীরভাবে প্রেম-ভালবাসা দিয়ে সংসার সুখের করে তোলে। প্রত্যেকটি রক্তের সম্পর্কের মানুষ এবং রক্তের সম্পর্ক ছাড়া মানুষ একে অপরকে ভালবাসে।
আল্লাহ তা'আলা হলেন নিজেই প্রেমের ভাণ্ডার। আর দুনিয়ায় আমরা যেখানে যত প্রকার স্নেহ, মমতা, ভালবাসা ভক্তিশ্রদ্ধা পাই উহা সবই আল্লাহ পাকের দেয়া প্রেম-ভালবাসা হইতে আগত। মানুষ ছাড়াও পশুপাখী, কীটপতঙ্গ পর্যন্ত নিজ নিজ সন্তানদের ভালবেসে থাকে। আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে সবই প্রেমের খেলা। প্রেম অতি পবিত্র বস্তু । ইহা কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন সৃষ্টির প্রতি প্রষ্টার প্রেম, হস্রষ্টার প্রতি সৃষ্টির প্রেম, সৃষ্টির প্রতি সৃষ্টির প্রেম। আল্লাহ তা'আলা তাঁর সৃষ্টির প্রতি কিরূপ প্রেম ভালবাসাপূর্ণ দৃষ্টি দিয়ে থাকেন তা জ্ঞানীগনই শুধু বুঝতে সক্ষম। আল্লাহ তা'আলার ইচ্ছা তার সৃষ্টি জীব তাঁর প্রেমে মুগ্ধ হয়ে তাঁর প্রশংসা ও গুণকীর্তন করতে থাকুক এবং এই উদ্দেশ্যেই তিনি বিশ্বজগত সৃষ্টি করেছেন। মানুষকে তিনি আশরাফুল মাকলুকাত রূপে সৃষ্টি করেছেন। এর কারণ শুধু একটাই, তাহলো মানুষ আল্লাহ তা'আলাকে ভালবাসবে। আবার আল্লাহর প্রতি তার বান্দার প্রেম অফুরন্ত। মানুষের প্রতি মানুষের প্রেম আল্লাহর প্রেমের বহিঃপ্রকাশ। আল্লাহর সৃষ্টিকে ভালবাসতে পারলে আল্লাহ তাহার প্রতি ততখানি ভালবাসা প্রদর্শন প্রকাশ করে থাকেন।
আমরা যদি আল্লাহকে ভালবাসি এবং তাঁকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে তাহার বান্দাকে তথা সৃষ্ট জগতকে ভালবাসি তবে বিশ্বজগতে সব যায়গায় প্রেমের বান ছুটবে, দূর হয়ে যাবে অশান্তি, দ্বন্দু, কলহ। আল্লাহর সৃষ্ট বান্দাকে ভালবাসারও একটা নিয়মনীতি আছে। আর এই নিয়মনীতি আল্লাহ পাকই নির্ধারন করে দিয়েছেন। সেই নির্ধারিত সীমার মধ্যে থেকেই আমাদিগকে আল্লাহর সৃষ্ট বান্দাকে ভালবাসতে হবে। আর আল্লাহর এই সীমারেখার মধ্যে বিবাহ একটি সীমারেখা।
হযরত আদম (আঃ) এবং হযরত হাওয়া (আঃ) বেহেশত হতে বিতারিত হয়ে দুনিয়ার দুই প্রান্তে দুইজন তিনশত পঞ্চাশ বৎসরকাল অবস্থান করার পর আবার তাদের মিলন হল। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে তাহাদের প্রেম ভালবাসা বিন্দুমাত্র কম ছিল না। কেহই অপরকে ভুলিতে পারেন নাই। হযরত নূহ (আঃ) তাঁর অবাধ্য পুত্র কেনানকে প্লাবনে নিমজ্জিত হতে দেখে ব্যাকুল হয়ে পড়েছিলেন। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) আল্লাহর প্রেমে নমরুদের আগুনের কুন্ডে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন। আল্লাহর প্রেমকে সকল কিছুর ঊর্ধ্বে রাখিয়া নিজের সন্তান হযরত ইসমাইল (আঃ)-কে কোরবানী দিতে উদ্যত হয়েছিলেন। আবার নিজের স্ত্রী হযরত হাজেরা (আঃ)-কে নির্বাসন দিয়াও স্ত্রীর প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা ও প্রেমের কারণে কোন দিন ভুলতে পারেন নাই। হযরত ইয়াকুব (আঃ) তাঁর পুত্র হযরত ইউসুফ (আঃ)-কে হারাইয়া সারা জীবন জীবন ক্রন্দন। এন করিতে করিতে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। হযরত আইয়ুব (আঃ)-এর স্ত্রী এ স্ত্রী হযরত রহীমা বিবি সুদীর্ঘ আঠার বৎসর গলিত কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত স্বামীর সেবা করেছিলেন স্বামীর প্রতি অকৃত্রিম প্রেম তাঁকে একাজে উদ্বুদ্ধ করেছিল।
আল্লাহ প্রদত্ত এই পবিত্র প্রেম যাতে খারাপ পথে ধাবিত না হয়। বিবেককে বিভ্রান্ত না করে, সেদিকে প্রত্যেকেরই দৃষ্টি রাখতে হবে। তা না হলে আল্লাহ প্রদত্ত এই পবিত্র প্রেমের অপব্যবহার হতে থাকবে। এতে আল্লাহ পাকের উদ্দেশ্যপূরণে বাঁধার সৃষ্টি হবে। আর সাথে সাথে আমাদের নিজেদের জীবনে নেমে আসবে অশান্তি নানা ধরনের বালা-মুছিবত। প্রেম সম্পর্কে আল্লাহ পাক কোরআনে বলেছেন, নারীদের সহিত মিলনের জন্য প্রেম ভালবাসা, সন্তানদের প্রতি স্নেহ-মায়া, জমাকৃত স্বর্ণ রৌপ্যের প্রতি প্রেম, এবং চিহ্নিত চতুষ্পদ জন্তু ও শস্যক্ষেতের প্রতি প্রেম, মানুষের জন্য লোভনীয় করা হয়েছে। এই সবই পার্থিব জীবনের জন্যে উপকারের বস্তু, আর আল্লাহর কাছে রয়েছে উত্তম স্থান। কোরআনের এই আয়াতের দ্বারা বোঝা যায়, আল্লাহর দেয়া প্রেমকে সঠিকভাবে কার্যকরী করতে হলে প্রথমে পার্থিব প্রেমের মাধ্যমেই আরম্ভ করতে হবে। কিন্তু ইহাই মুখ্য উদ্দেশ্য নয়, ক্রমে ক্রমে ইহা আল্লাহর প্রতি প্রেমে রূপান্তরিত করতে হবে। আল্লাহর প্রতি প্রেমই আসল প্রেম। আর পার্থিব জগতের প্রেম ক্ষণস্থায়ী।
প্রার্থিব প্রেমকে সঠিক পন্থায় অর্জন করতে হলে, বিবাহ বন্ধনের মাধ্যমেই অর্জন করা সম্ভব। আর ইহাই আল্লাহ পাকের নিয়ম। যুবক যুবতীদের বিয়ের মাধ্যমে যে প্রেমের সূচনা হয়ে মিলন সংঘটিত হয়, তার ফলে ভবিষ্যতে সুন্দর চরিত্রবান সন্তান লাভ করতে পারে। আর আল্লাহ পাকের ইচ্ছা এইভাবে যাতে সৃষ্টির বংশ বৃদ্ধি পেতে থাকে। কিন্তু খুবই দুঃখের বিষয়, বর্তমান দুনিয়ার বুকে একদল নির্লজ্জ ও উচ্ছৃংখল যুবক যুবতীদের বেহায়াপনা দেখলে, দুঃখে লজ্জায় মাথা নত হয়ে যায়। এই ধরনের যুবক যুবতীদের দ্বারা সমাজে বিষাক্ত বায়ু প্রবাহিত হইতেছে। এদের দ্বারা রাহাজানি, ডাকাতি, নারী ধর্ষণ, হত্যা, ভ্রুন হত্যা, অবৈধ গর্ভপাত হয়ে থাকে। এরা মানুষের অশান্তির মূল। যৌবনের উত্তাল তরঙ্গমালাকে নিয়ন্ত্রিত করতে না পেরে আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ) এর নির্দেশিত পথ হতে অনেক দূরে সরে যায়। এরা একদিকে দুনিয়ার জীবনে অশান্তি টেনে আনছে আবার পরজীবনেও শাস্তি ভোগ করবে। আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কোরআনে বলিয়াছেন, "হে মানবগণ। তোমরা সেই আল্লাহ পাককে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে একব্যক্তি হতে সৃষ্টি করেছেন ও তাহা হতে তোমাদের সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন ও তাহাদের উভয় হইতেই অনেক নারী পুরুষ সৃষ্টি করেছেন। এবং সেই আল্লাহকে ভয় কর, যিনি তোমাদিগকে পরস্পর সম্বন্ধযুক্ত ও ঘনিষ্ঠতর করেছেন। নিশ্চয় আল্লাহই তোমাদের তত্ত্বাবধানকারী।
এখানে মহান আল্লাহ তা'আলা হযরত আদম ও হযরত হাওয়া (আঃ)-এর মাঝে যে প্রেমের জন্ম করে দিয়েছিলেন। তার প্রেরণায় তাদের বৈধ মিলনের মাঝে দুনিয়ার বুকে কোটি কোটি মানব সন্তান জন্মলাভ করিয়াছে। তারা পবিত্র প্রেমের দ্বারা আল্লাহ তা'আলার নির্ধারিত নিয়মে তাঁর সৃষ্টিকে সংরক্ষিত করে রাখিবে। আল্লাহ তা'আলার দেওয়া পবিত্র শষ্ট এই প্রেমকে পবিত্র রাখা যায় একমাত্র বিবাহ বন্ধনের মাধ্যমে স্বামী স্ত্রীর মিলনের ফলে। বিবাহ এবং এর প্রয়োজনীয়তা পরম করুণাময় মহান সৃষ্টিকর্তা নারী-পুরুষকে সৃষ্টি করে একে অপরের বৈধ মিলনের দ্বারা তাঁর সৃষ্টিকে রক্ষা করার ব্যবস্থা করেছেন।
এই মিলনের মাঝেই নারী পুরুষের রয়েছে আনন্দ ও শান্তি। অতএব, নারী পুরুষের বিবাহের ব্যবস্থার প্রচলন করা হয়েছে। শুধু যৌন লালসা মিটানোর জন্যই বিবাহের প্রচলন হয় নি। বিবাহের পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ থাকিয়াই নারী-পুরুষ মিলন সুখ ভোগ করবে ও তারা সন্তান জন্য দিবে। তাতে তারা পরম আনন্দ উপভোগ করবে এবং এতে মহান আল্লাহ্ তা'আলার সৃষ্টি বৃদ্ধি পাবে। মানুষের জীবনকে পবিত্র রাখতে হলে বিবাহের দরকার। এতে আল্লাহর ইবাদতে মনোনিবেশ করা সহজ হয়। মানুষের সমাজে কোন অনাচার দুর্নীতি হতে পারেনা। কাজেই বিবাহের দ্বারা মানুষের অলৌকিক ও পারলৌকিক জীবন হয় কলুষমুক্ত। দুনিয়ার জীবনে স্থায়ী সুখ ও শান্তি নেমে আসে। এই জন্য দুনিয়ার সমস্ত ধর্মেই বিবাহের প্রচলন আছে। নারী পুরুষের যৌন পিপাসা আল্লাহ পাকের সৃষ্টি। এর মধ্যে আল্লাহ পাকের নিগুঢ় তত্ত্ব নিহিত রয়েছে। নারী পুরুষের মাঝে যৌন পিপাসা বা মিলনের আশা না থাকলে তারা মিলনের জন্যে ব্যাকুল হতো না। যৌন তৃপ্তি মানুষের মনকে অবসর দূর করে পরম পূলক দান করে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রেম ভালবাসা বৃদ্ধি করে এবং তাদের সংসারে বেহেশতী সুখ নেমে আসে। আল্লাহ পাক কোরআনে বলেছেন, "হে মুমিন গণ। আল্লাহ তোমাদের জন্য যাহা হালাল করেছেন, সেই বস্তুকে তোমরা হারাম করিও না এবং সীমা লংঘন করিও না", সীমা লংঘনকারীকে আল্লাহ ভালবাসেন না। আল্লাহ পাকের অন্যতম নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের মধ্য হতে তোমাদের জন্য সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন, যেন তোমরা তাদের কাছ থেকে শান্তি লাভ করতে পার এবং তিনি তোমাদের মধ্যে প্রেম ও সহানুভূতি সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয়ই ইহাতে চিন্তাশীলদের জন্য নিদর্শনসমূহ রয়েছে। নারী পুরুষ আল্লাহ পাকের সৃষ্টির এক অপূর্ব কৌশল। কারণ একজন অন্যজনের পরিপূরক। নারী এককভাবে সম্পূর্ণ হতে পারে না। আবার পুরুষও এককভাবে সম্পূর্ণ হতে পারে না। ইহা একে অপরের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকে। আল্লাহ পাক পুরুত্বকে সৃষ্টি করেছেন সহনশীলতার শ্রেষ্ঠ উপাদান দিয়ে আর নারীকে সৃষ্টি করেছেন স্নেহ, মমতা, কোমলতা ও সন্তান পালনের উপযোগী করে। পুরুষের শ্রম ও নারীর কোমলতা মানব জীবনে এক অপূর্ব শক্তি সৃষ্টি করে। যার ফলে উভয়ের জীবন হয়ে উঠে মধুময় সুন্দরময় ও আনন্দময়। আর শুধু বিবাহের দ্বারা এরূপ শান্তিময় পরিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব। বিবাহের দ্বারা আল্লাহ পাক খুশী হন, আল্লাহ পাকের সৃষ্টি রক্ষা পায় এবং নারী পুরুষের মনে এনে দেয় আনন্দের বন্যা। কাজেই বিবাহের দ্বারাই নারী পুরুষের অবৈধ যৌন মিলন বা ব্যভিচার হতে সমাজকে রক্ষা করা যায়।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, অবিবাহিত নারী পুরুষের বিরাশি রাকআত নামায অপেক্ষা বিবাহিত নারী পুরুষের দুই রাকআত নামায উত্তম। তিনি আরও বলে-ছেন, বিবাহের মত পরস্পরে সঠিক মহব্বত আর কোন কিছুতে স্থাপিত হয় না।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, হে মুসলমানগণ! তোমরা জানিয়া রাখ যে, তোমাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট সেই ব্যক্তি, যে বিবাহ করেনা। কেননা যে ব্যক্তি উপযুক্ত বয়সে বিবাহ করে না, নিশ্চয় সে ব্যক্তি ব্যভিচারী না হয়ে পারে না।
ইসলাম সর্বকালের মানুষের জন্য চিরস্থায়ী জীবন ব্যবস্থা। যে জীবন ব্যবস্থার মধ্যে নিতি আছে মানুষের সব ধরনের সমস্যার সমাধান এবং সুন্দর ও সুখী পরিবার গঠনের ব্যবস্থা। কাজেই ইসলাম সব সময় বিবাহের উপর গুরুত্ব আরোপ করে থাকে। এই বিবাহের মধ্যে আল্লাহ পাকের গোপন ইঙ্গিত নিহিত রয়েছে যা জ্ঞানীগণ চিন্তা করে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যায়। যে লোক সন্তান পালন বা সংসার পরিচালনার ভয়ে বিবাহ করে না, সে যত শিক্ষিত, সম্ভ্রান্ত পরিবারের বা উচ্চস্তরের সাধক হউক না কেন সে আল্লাহর প্রিয় পাত্র হতে পারে না। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, সেই যুবক যুবতীই প্রকৃত মিসকীন যাহার স্বামী বা স্ত্রী নাই, যদিও তাহারা ধন-সম্পদে বা শিক্ষায় উন্নত।
অবিবাহিত যুবক যুবতীর দ্বারাই সমাজের চরিত্র কলুষিত হয়ে থাকে। তারা যৌন তারণায় উন্মাদ হয়ে একেবারে পশুর স্তরে নেমে যায়। এর ফলশ্রুতিতে যৌন রোগে আক্রান্ত হয়। কিছু সংখ্যক যুবক আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা অতিক্রম করে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়। অবেশে সমাজ কর্তৃক লাঞ্ছিত বিতাড়িত হয়ে নিজেদের জীবনকে বিষময় করে তোলে। অনেক চরিত্রহীনা নারীর গর্ভে অবৈধ সন্তান জন্ম নেয়। এভাবে অবিবাহিত অসৎ চরিত্রের যুবক-যুবতীরা দেশের, জাতির অশান্তির সৃষ্টি করে। কাজেই নারী পুরুষের বিবাহের প্রয়োজন অবশ্যসম্ভাবীরূপে প্রমাণিত।
পাবলিশআর অর্গানাইজেশন সিয়াম হাসান নিউজ লিমিটেড