মহান আল্লাহর পরিচয় :
পরম করুণাময় রাব্বুল আলামীনের পরিচয় দেওয়া কোন লোকের পক্ষে সম্ভব নয়। আল্লাহ্ তা'আলার ব্যাপারে বলতে গেলে সর্বপ্রথমে বলতে হয়, তিনি আমাদের সৃষ্টিকর্তা, মালিক, রিযিকদাতা, বিধানদাতা। এককথায় তিনি সমস্ত আসমান জমিনের মালিক ও পরিচালক এবং তাঁর জ্ঞানের বাহিরে কোন কিছুই সংঘঠিত হয় না। আল্লাহ্ তা'আলার কোন শরীক নেই, তিনি একক, তিনি কাউকে জন্ম দেনও না, কারো হতে জন্ম হন নাই। তাঁর সমকক্ষ কেহ নাই। তিনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী।
'আল্লাহ' শব্দটি তাঁর জাতি বা সত্তাবাচক নাম। এই শব্দের কোন প্রতিশব্দ নাই। আল্লাহ নামের কোন লিঙ্গান্তর বা কোন বচন নেই। দুনিয়ার কোন ভাষায় এর অনুবাদ করা সম্ভব কখনও নয়। একমাত্র সৃষ্টি জগতের অধিকর্তা আল্লাহ নিজেই তাঁর পরিচিতির জন্য এই নাম ব্যবহার করেছেন। আল্লাহ বলতে যে শুধু আল্লাহ তা'আলাকে বুঝায় তাই সঠিক। কারণ কোন কাফের, মুশরিক, বেদ্বীন কেহই একথা বলে না যে আল্লাহ তাদের দেবতা বা হিন্দুরা ভগবানকে আল্লাহ বলে না। আল্লাহ এমন এক সত্ত্বা যার পরিচয় তাঁর হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মক্কার কাফিরদেরকে দিয়েছিলেন।
সূরা ইখলাসে, আয়াতুল কুরসীতে এবং কালামে পাকের আরো অনেক জায়গায় আল্লাহ পাক নিজেই তাঁর পরিচয় তুলে ধরিয়াছেন। আল্লাহ বলতে আমরা শুধু অদ্বিতীয় এক সত্ত্বাকে বুঝে থাকি। যাকে দেখা যায় না কিন্তু বিপদে ডাকলে তিনি সাড়া দেন, ঘোর বিপদে যখন পৃথিবীর কেহই সহযোগীতা করার ক্ষমতা রাখে না, তখন তিনিই আমাদের সাহায্য করেন। আল্লাহ তা'আলার শান বলে শেষ করা যাবে না। পবিত্র কোরআনে তাঁর নিরানব্বইটি নাম রহিয়াছে। আসমান ও জমীনে সকল কিছুই তাঁহার অধীন। আল্লাহ্ তা'আলা কখনও ঘুমান না। ঘুমও তাঁহাকে স্পর্শ করে না। আসমান ও জমিনের সবকিছু তাঁর ক্ষমতার অধীন। কেহই ইচ্ছা করেও তাঁর ক্ষমতার বাহিরে যাইতে পারে না। হে আমার জাতি, তোমরা একমাত্র আল্লারই ইবাদত (দাসত্ব) কর। তিনি ছাড়া তোমাদের অন্য কোন ইলাহ (মাবুল) নাই।
এত বড় বিশাল পৃথিবী, চন্দ্র সূর্য, নক্ষত্র, গ্রহ উপগ্রহ বৃক্ষ লতা, মানব দানব, পশু-পাখি, সাগর পাহাড় সবকিছু যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনিই আল্লাহ তায়ালা। তিনি সর্বশক্তিমান, অনন্তদ মহিমায় অদ্বিতীয়। তিনিই সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা, রক্ষাকর্তা ও পালন কারী। খাওয়া পরা, রোগ-শোক, মৃত্যু কোন কিছুই তাঁকে স্পর্শ করিতে পারে না। হায়াত ও'মউতের মালিক তিনিই। রিযিকদাতা, আইন এবং বিধানদাতাও একমাত্র তিনি। আমাদের মনে কোণে যে কথা লুক্কায়িত থাকে তিনি সবই জানেন। আর তাঁর ক্ষমতায় বাধা দিতে বা প্রতিবাদ করিতে পারে এমন শক্তিধর আর কেহ নেই। মহান আল্লাহ তা'আলার মাঝে এইসব অসীম গুণাবলী বিদ্যমান এবং তিনি ছাড়া আর কেহই ইলাহা বা এবাদতের যোগ্য নাই। সৃষ্টি জগতের সকলকেই আল্লাহর উপর ঈমান আনিতে হয়। মুসলমান হিসেবে
আমাদের কর্তব্য- মুখে স্বীকার করা এবং অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করা যে, মহান সত্তা আল্লাহ নামে পরিচিত তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নাই। এই ঈমানের দাবী হল- আর সব কিছুকে বর্জন করে কেবল মাত্র তাঁরই প্রতি দৃঢ় প্রত্যয় স্থাপন করা, তাকেই ভালবাসা, তাঁকেইভয় করা তাঁরই কাছে প্রার্থনা করা, তাঁরই কাছে কামনা করা, সর্বাবস্থায় তাঁরই উপর ভরসা রাখা, সর্বদা মনে রাখা, একদিন তাঁর নিকট সকলকে ফিরে যেতে হবে। সকলের ভালবা মন্দ পরিণতি তাঁর ফয়সালার উপরই নির্ভর শীল। ঈমানদারগণ কিয়ামতের দিন এই মহান প্রভু আল্লাহ তাআলার দিদার লাভ করে ধন্য হইবে। আল্লাহ এক, তাঁর কোন অভাব নেই। তিনি কাকেও জন্য দেন নাই এবং তিনি কাহারো থেকে জন্ম নেন নাই। তাঁর সমক্ষস কেহই নাই। তিনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী। তিনি তন্দ্রা ও নিদ্রা গ্রহণ করেন না। আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীর সকল কিছুই তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন। মহাবিশ্বের সকল কিছুই তিনি সৃষ্টি করেছেন। সবকিছুর পালনকর্তা ওবিধানদাতা তিনি। সব জায়গায় তাঁর সত্ত্বা ও গুণের সাথে কোন কিছুর তুলনা করা যায় এমন কিছু আকাশ ও পৃথিবীর কোথাও নেই।
সৃষ্টি রহস্য:
অনেককাল আল্লাহ তা'আলা একাকীত্ব থেকে নিজের সত্ত্বার দরকার অনুভব করলেন। তখন তিনি নিজের জ্যোতির মধ্যে হতেই এক ভিন্ন সত্ত্বা সৃষ্টি করলেন। তাই সৃষ্টির প্রথম হযরত মুহাম্মদ (সঃ)-এর নূর। এই নূর আল্লাহ তা'আলার সৃষ্ট নূর। যখন এই নূর সৃষ্টি করেন, তখন লওহ, কলম, বেহেশত, দোযখ, আসমান, জমিন, ফেরেশতা, চন্দ্র,সূর্য, জ্বীন, ইনসান কোন কিছুই আল্লাহ পাক সৃষ্টি করেন নাই। আল্লাহ তা'আলা সেই নূরকে চার ভাগ করে, এক ভাগ দিয়ে লওহ, এক ভাগ দিয়ে কলম, এক ভাগ দিয়ে আরশ সৃষ্টি করলেন। চতুর্থ ভাগকে পুণরায় চার ভাগ করে প্রথম ভাগ দ্বারা আরশ বহনকারী ফেরেশতা, দ্বিতীয় ভাগ দিয়ে কুরসী এবং তৃতীয় ভাগ দিয়ে বাকী
ফেরেশতাগণকে সৃষ্টি করলেন। চতুর্থ অংশ আবার চার ভাগে ভাগ করে প্রথম অংশ। দিয়ে আকাশ মণ্ডলী, দ্বিতীয় অংশ দ্বারা জমিন তৃতীয় অংশ দ্বারা বেহেশত ও দোযখ সৃষ্টি করলেন। পুণরায় চতুর্থ অংশকে চার ভাগে ভাগ করে প্রথম ভাগ দ্বারা মুমিনগণের চোখ, জ্যোতি, দ্বিতীয় অংশ দিয়ে তাহাদের কলবের নূর তৈয়ার করেন ইহাকে মারেফতে এলাহি বলে। তৃতীয় অংশ দ্বারা মুমিনগণের জবানে উচ্চারিত নূর তৈয়ার করেন এবং ইহাই তাওহীদ লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।
মানব সৃষ্টির আসল উদ্দেশ্য:
আল্লাহ পাক বলেছেন, জ্বীন এবং ইনসান জাতিকে আমার ইবাদত করা ছাড়া অন্য কিছুর জন্য সৃষ্টি করি নাই। আল্লাহ পাক মানব জাতিকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে ঘোষণা করেছেন এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত জ্ঞান দান করেছেন। আল্লাহ পাকের ইবাদত খুব কঠিন কাজ নয়। যে কাজগুলি করলে আল্লাহ পাক সন্তুষ্ট হন সেই কাজগুলিকে সম্পাদন করার নামই ইবাদত। ইবাদতের মূল হল ঈমান। কাজেই আল্লাহ পাক মানবজাতিকে শুধু তার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন।
নারী-পুরুষের শ্রেণী বিভাগ
বিশেষজ্ঞগণ মানুষের চরিত্র ও লক্ষ্যনাদির উপর নির্ভর করে নারী ও পুরুষকে চার ভাগে বিভক্ত করেছেন। গুণাগুণ, স্বভাব-চরিত্র, আচরণের দিক দিয়া পুরুষকে চার ভাগে বিভক্ত করেছেন। আবার নারীকে চারভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। নারী ও পুরুষের
ভাগগুলির পৃথক পৃথক নাম রয়েছে:
নারী পুরুষের এই ভাগগুলি জানা থাকিলে পরস্পরের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সময় পাত্র-পাত্রী নির্বাচনে সাফল্য লাভ করা যায়। এ ব্যাপারে কোন ভুলের শিকার হতে হয় না। যার পরিণামে পাত্র-পাত্রী উভয়েই পারিবারিক দাম্পত্য জীবনে পরম সুখ-শান্তি স্বামী-স্ত্রীর মধুর মিলন ও সুখময় দাম্পত্য জীবন পারিবারিক দাম্পত্য জীবন সুখের হয় না। জীবন তখন একটি কারাগারে পরিণত হয়। মনে হয় যেন সংসারে দোযখের আযাব নেমে এসেছে। এই অবস্থার সৃষ্টি যাহাতে না হয় সেই দিকে দৃষ্টি রেখে নারী-পুরুষের শ্রেণীভাগগুলো উল্লেখ করা হইল।
পুরুষ জাতি চার শ্রেণীতে বিভক্ত:
পুরুষ জাতি চারটি শ্রেণীতে বিভক্ত।
১. শশক জাতীয় পুরুষ
২. মৃগ জাতীয় পুরুষ
৩. বৃষ জাতীয় পুরুষ
৪. অশ্ব জাতীয় পুরুন্য। নিচে বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হল।
শশক জাতীয় পুরুষ:
সমস্ত পুরুষের মধ্যে শশক জাতীয় পুরুষই শ্রেষ্ঠ। ইহারা দীর্ঘ আকৃতিবিশিষ্ট হয়ে থাকে। ইহাদের মাথা খুব বড়ও নয় আবার ছোটও নয় মধ্যম ধরনের। মাথার চুলগুলি কালো বর্ণের খুব মসৃণ এবং ঘন হয়। ললাট প্রশস্ত, উজ্জ্বল এবং লাবণ্যময়। গঠন আকর্ষণীয়। মুখমণ্ডল কোমল, কিছুটা মাংসল তবে খুবই সুন্দর। কান দুটি মধ্যমাকৃতির হয়, চোখ দুটি ভাসাভাসা, চোখের মনি কালো হয়। ভুরু খুব সরু ধনুকের মত দেখতে। চোখের চাহনী তৃপ্তিদায়ক ও গভীর। নাক চিকন, টানা ও তার মাথা উঁচু এবং একেবারে সোজা, মুখের আকৃতি অতি সুন্দর। ঠোঁট দুটি মাংসল, অধিক পুরুও নয় আবার চিকনও নয়। দাঁতগুলো স্বচ্ছ এবং সাদা ঝকঝকে পুঁটি মাছের মত। এই ধরনের পুরুষেরা সাধারণত মৃদু হাসি দিয়ে থাকে। ফলে দাঁতের আকষর্ণীয় রূপ বাহির হয়ে আসে।
শশক শ্রেণীর পুরুষদের চেহারা ও মুখমণ্ডলের রূপ প্রত্যেক লোকের জন্যই আকর্ষণীয়। বিশেষ করে নারীদের মনে এইরূপ কামনা-বাসনা জাগিয়ে দেয়। ইহাদের মুখের ভাব দেখে মনে হয় ইহারা কি যেন চিন্তা করছে। আসলে তাহা কিছুই নয়। এই জাতীয় পুরুষদের মনে সব সময় ধর্মীয় ভাব থাকে।
যে নারী শশক পুরুষকে স্বামী হিসেবে পেয়েছে তার জীবন ধন্য। ইহাদের মুখের ভাষা অত্যন্ত মিষ্ট। মানুষ ইহাদের কথায় তৃপ্তি পায়। খুব বেশী কথা বলা ইহাদের স্বভাব নয়। সব সময় সত্য কথা বলে, মিথ্যা কথা বলে না। ইহারা সাধারণত পাপ কাজকে ঘৃণা করে চলে। যৌন চেতনা ও কামোত্তেজনা ইহাদের মধ্যে স্বাভাবিক মাত্রায় থাকে। ইহারা নিজের স্ত্রীর প্রতি সন্তুষ্ট। অন্য নারীর প্রতি কখনও দৃষ্টিপাত করে না। ইহাদের দেহ হতে এক ধরনের মিষ্টি গন্ধ বের হয়। শশক জাতীয় পুরুষের সাথে সঙ্গিনী জাতীয় স্ত্রীর বিবাহসম্পন্ন হলে তাহাদের সংসারে বেহেশতের সুখ নেমে আসে।
মৃগ জাতীয় পুরুষ:
মৃগ জাতীয় পুরুষদের কতগুলো লক্ষ্যণ প্রায় শশক জাতীয় পুরুষের মত। ইহারা অনেক গুণে বিভূষিত। মৃগ জাতীয় পুরুষদের দেহাকৃতি শশক শ্রেণীর পুরুষদের চেয়ে দীর্ঘ হয়। মাথা, মাথার চুল, কপাল, গলা, নাক, চোখ, ঠোঁট, দাঁত এবং শরীর মণ্ডল শশক ও মৃগ জাতীয় পুরুষের মধ্যে তেমন পার্থক্য ধরা যায় না। মৃগ জাতীয় পুরুষ সাধারণত' গৌড় বর্ণের হয়ে থাকে। আবার কিছু কিছু শ্যাম বরণও হয়ে থাকে। ইহাদের শরীরের চামড়া খুব মোলায়েম। ইহারা বেশ শক্তিশালী হয়। সব সময় এই জাতীয় পুরুষের মুখে হাসি ফুটিয়া থাকে। মৃগ জাতীয় পুরুষ সাধারণত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে থাকতে ভাল- বাসে। কাপড়-চোপড় পরিষ্কার রাখে। ধর্মের দিকে এই শ্রেণীর পুরুষেরা বেশী আগ্রহশীল। পিতা মাতার প্রতি এরা সব সময় সদাচার করে থাকে। সব সময় সত্য কথা বশ্যই অভদ্য মন্দকারীয় পুরুদেরা দেখা দড়িমাবে পানাহার করে খাতে। মুখজাতীয় ২কং তার স্ত্রীকে অধিক ভালবাসে। এদের রতিক্রিয়া শক্তি বেশী। সব সময় রতিক্রিয়ায় ২. এ থাকতে চায়। মৃণজাতীয় পুরুষের সাথে চিত্রার্থী জাতীয় নারীর বিবাহ হলে তাদের সাংস্যার সুখের হয়। ইহারা স্বামী-স্ত্রীতে এত মহব্বত হাখে যে, একের মৃত্যুজনিত কারণে অন্যেও মৃত্যু কামনা করে থাকে।
বৃষ জাতীয় পুরুষ:
বৃষ জাতীয় পুরুষগণ সুন্দর ও সুশ্রী লোকদের মধ্যে গণ্য হয়। কিন্তু ইহাদের শা কিছুটা ঘেটে ধরনের। মুখমণ্ডলের সৌন্দর্যের সাথে কিছুটা শক্তি সামর্থ ও তেজ বীর্জের আভাস পাওয়া যায়। ইহাদের রতিশক্তি অত্যধিক পরিমাণে। এই জাতীয় পুরুষদের লজ্জা একটু কম, ফলে লজ্জাহীনদের মধ্যে গণ্য হয়। অন্যের স্ত্রীর সাথে প্রেমালাপ করতে মোটেও লজ্জাবোধ করেনা। ইহাদের চরিত্রে দয়ামায়া কম। ধর্মবাণী ও উপদেশমূলক বাত্যের প্রতি ইহারা বিরক্তবোধ করে। বৃদ্ধ জাতীয় পুরুষ এক স্ত্রীতে সন্তুষ্ট হতে পারে না। কাজেই অসংখ্য নারীর সহিত প্রতিক্রীয়া সম্পন্ন করেও তপ্ত হয় না। অবৈধভাবে জোরপূর্বকও অনেক নারীর সতীত্ব হরণ করে থাকে। বহু জাতীয় পুরুষের সাথে সঙ্গিনী জাতীয় নাতীর বিবাহ হলে তাদের যৌন জীবন সুখময় হয়া।
অশ্ব জাতীয় পুরুষ:
অশ্ব জাতীয় পুরুষই পুরুষদের মধ্যে নিম্ন শ্রেণীর। এদের মাঝে দুই একজন ব্যতীত প্রায় সকলেই কালো রংয়ের হয়ে থাকে। এদের দেহ খুব মোটাসোটা ও শাক্তিশালী হয়। ইহাদের মুখমণ্ডল প্রায়ই এ্যকরো-থ্যাবরো হয়ে থাকে। চোখ কোটরাগত চোখের মনি, দেখে মনে হয় কাল বর্ণের কিছু। নাক মোটা, কপাল হয় একেবারে বেশী উঁচু না হয় বেশী নীচু। মাথার চুলগুলি পাতলা এবং সজারু কাটার মত। ইহারা ভীষণ বদমেজাজী প্রকৃতির হরে থাকে। ইহারা হাটার সময়ে হুপথপ শব্দ হয়। এই জাতীয় পুরুষেরা সাধারণত দিনে ঘুমাইয়া থাকে। ঘুমের অবস্থায় ইহাদের নাক হতে এক ধরনের শব্দ হতে থাকে। ইহাদের শরীর থেকে যে ধাম ব্যাহির হয় তাহা ভীষণ দুর্গন্ধযুক্ত। অশ্ব জাতীয় পুরুণ্য ধার্মীক ও সাৎ কখনও হয় না। যত রকমের অন্যায় আছে তা তারা করতে পারে। এই জাতীয় পুরুষ কখনও কোন বিশিষ্ট হওয়া সত্ত্বেও ভীষণ কঠিন্যের পরিচয় দেয়। ইহাদের কামভাব এত বেশী যে সব সময় অপাত্রে কামভাব পরিবর্তন করে থাকে। ইহারা বেশ্যালয়ে গমন করে থাকে। এই ধরনের পুরুষের সাথে হস্তিনী জাতীয় নারীদের বিবাহ হলে যৌন জীবন সুখের হয়। কারণ উভয়েরই কামশক্তি তুলানামূলকভাবে বেশী। যৌন জীবনে ইহাদের সুখ চিরস্থায়ী হয়।
স্ত্রী জাতি চার শ্রেণীতে বিভক্ত:
স্ত্রী জাতির মধ্যে পুরুষের মতই চারটি শ্রেণী ভাগ আছে। ১. পয়িনী জাতীয় নারী, ২. চিত্রানী জাতীর নারী ও শালিনী জাতীয় নারী, ৪. হস্তিনী জাতীয় নারী।
পদ্মিনী জাতীয় নারী:
সমস্ত নারীদের মধ্যে পয়িনী জাতীয় নারীগণ শ্রেষ্ঠ। ইহারা এই পৃথিবীতে আল্লাহ। পাকে শ্রেষ্ঠ নিয়ামত। ইহাদের রূপ ও গুণের তুলনা হয়না। পরিনী জাতীয় নারীদের পেট ও পিঠের সৌন্দর্যের তুলনা নাই। এদের পা যুগল অতি সুন্দর, গোড়ালী অত্যন্ত নিখুঁত ও নির্ভুল। জানুস্বর কচি লাউয়ের ভোগার মত।
পথিনী জাতীয় নারীর বুক যেন ডালিমের সাথে তুলনা করা যায়। এদের দেহ খুব মোটাও নয় খুব পাতলাও নয়। তবে পাতলা বলে গণ্য হয়ে থাকে। এদের নিতম্ব উন্নত,বিস্তৃত ও মাংসল। লজ্জাস্থান লোমহীন। এদের চাহনী হরিণের মত। কোমর চিকন, হাত-পা গোলাকার, দেখতে খুবই মনোহর। এদের মুখে সব সময় হাসি ভাব লেগে থাকে। এরা মিষ্টভাষী, দয়ালু, দানশীল হয়ে থাকে। পদ্মিনী জাতীয় নারী যে ধরনের পোশাক পরিধান করুক না কেন তাহাদেরকে সুন্দর দেখায়। পদ্মিনী জাতীয় নারীদের শরীর হতে এক ধরনের সুঘ্রান বাহির হয়। এতে স্বামীর মন প্রেমে পূর্ণ হয়ে যায়। এদের পোশাক-পরিচ্ছদে, বিছানা-পত্রে সেই সুঘ্রাণ পাওয়া যায়। যে সংসারে পদ্মিনী নারী স্ত্রী হয়ে আসে সে সংসার বেহেশতী সুখে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। পদ্মিনী নারীরা সাধারণত স্বামীভক্ত হয়ে থাকে। এরা অন্য পুরুষ সম্পর্কে মনের ভিতর কোন খারাপ ধারনা পোষণ করে না। এদের যৌন উত্তেজনা কম এবং অল্পতেই সন্তুষ্ট থাকে। পদ্মিনী নারীদের বিবাহ শশক জাতীয় পুরুষের সাথে হলে তাদের মধ্যে প্রেমের জোয়ার বয়ে যায়। দাম্পত্য জীবনে চির সুখ বিরাজ করে। ইতিহাস বিখ্যাত শুলতানা রাজিয়া, মমতাজ মহল, নূরজাহান বেগম পদ্মিনী জাতীয় মহিলা ছিলেন।
চিত্রানী জাতীয় নারী:
চিত্রানী জাতীয় নারীরা প্রায় পদ্মিনী জাতীয় নারীর অনুরূপ। এই দুই শ্রেণীর নারীদের ব্যবধান নির্ণয় করা খুব কঠিন। তবে পদ্মিনী নারী চিত্রানী নারী অপেক্ষা অনেক ভাল।' চিত্রানী জাতীয় নারীদের গায়ের রং খুবই সুন্দর যেন দুধে আলতা। তাদের মাথার চুল খুব সুন্দর। কোমর চিকন এবং খুব আকর্ষণীয়, উরু নরম ও চওড়া, বুক উঁচু। চোখ বড় এবং গোলাকৃতির। দেখতে সুন্দর। হাত পায়ের গঠন গোলাকৃতি ও মাংসপূর্ণ, দেখতে লোভনীয় যে ধরনের পোশাক এই জাতীয় নারীরা পরিধান করবে তাতেই মানানসই হবে এবং দেখতে সুন্দর লাগবে। এই জাতীয় নারী চলা ফেরার সময় চোখ নিচের দিকে রাখে। এদের মুখের ভাষা খুব মিষ্ট। এরা অতিশয় লজ্জাশীলা। লোভ লালসা কম, সব সময় অল্পে তুষ্ট থাকে। এরা সব সময় সত্য কথা বলে। স্বামী সেবাকে এরা ধর্মীয় কাজ মনে করে। এই শ্রেণীর নারী পাওয়া যে কোন পুরুষের পক্ষে সৌভাগ্যের ব্যাপার। এই জাতীয় নারী যে সংসারে স্ত্রী হয়ে আগমন করে সে সংসার সুখের হয়। এরা নিজের স্বামী ছাড়া অন্য পুরুষের প্রতি কখন ও আসক্তি অনুভব করে না। এরা স্বামীর মন জয় করিতে খুবই দক্ষ। চিত্রানী নারীর বিবাহ মৃগ জাতীয় পুরুষের সহিত হলে তাহাদের প্রেমময় দাম্পত্য জীবন খুবই সুখের হয়।
শঙ্খিনী জাতীয় নারী:
শঙ্খিনী জাতীয় নারীগণ শারীরিক গঠনে সুন্দর হয়ে থাকে। এই জাতীয় নারীদের চেহারা শ্যামবরণ হয়ে থাকে। এরা আকৃতিতে লম্বা হয়, নাক উঁচু, চুল লম্বা, হাত-পা লম্বা, স্তন শক্ত হয়। কিন্তু দেখতে ডালিমের মত মনে হয়। কোমর চিকন, কথাবার্তা খুব গম্ভীর প্রকৃতির কিন্তু মিষ্টি মধুর। প্রেম রাজ্যে এরা দক্ষ ও পণ্ডিত। এদের কাম শক্তি প্রখর, সব সময় কাম চিন্তায় ডুবিয়া থাকে। তাহাদের লজ্জা শরম কম, কাজেই অন্য পুরুষের প্রতি বার বার দৃষ্টিপাত করে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় এরা ভিন্ন পুরুষের সাথে দৈহিক মিলন করে। এই জাতীয় নারী নিয়ে পুরুষেরা অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের ঝামেলায় জড়াইয়া যায়। এই জাতীয় নারী খাওয়া-দাওয়া, স্বাচ্ছন্দ ও স্বচ্ছলতার জন্য বেশী লালায়িত। আর তা লাভ করার জন্য অন্যায় পথ অবলম্বনে দ্বিধাবোধ করে না। এজন্যে তাহারা স্বামীকে অতিষ্ট করে তোলে। এদের স্বভাব সরলতার চাইতে কপটতা বেশী। বাহিরে এরা সতীত্ব ও ধার্মিকতার ভাব দেখালেও ভিতরে ইহার বিপরীত। শঙ্খিনী জাতীয় নারীদের সহিত বৃষ জাতীয় পুরুদের বিবাহ হলে তাহাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হয়।
পাবলিশ আর অর্গানাইজেশন সিয়াম হাসান নিউস লিমিটেড