নামাজ পড়ার পূর্বে কি করতে হবে:
নামাজ পড়ার পূর্বে ৭টি কাজ করা ফরজ।
(১) শরীর পাক পাক করা
(২) কাপড় পাক করা
(৩) নামাজের জায়গা পাক করা
(৪) ছতর ঢাকা
(৫) কেবলা মুখী হওয়া
(৬) সময় হওয়া
(৭) নামাজের নিয়ত করা
এগুলোকে নামাজের শর্তও বলা হয়।
শরীর পাক করার পদ্ধতি:
শরীরকে হয়তো হলছে আকবর বা বড় নাপাকী কিংবা হলছে আসগর বা ছোট নাপাকী হতে পবিত্র করতে হবে। বড় নাপাকী হতে পবিত্র করতে হলে তাকে অবশ্যই গোসল করাতে হবে আর ছোট নাপাকী হাতে পবিত্র হওয়ার জন্য অজু করলেই চলবে শুধুমাত্র অজু করলেই চলবে।
গোসলের বিবরণ:
গোসল এটা আরবী শব্দ-এর অর্থ হল ধৌত করা কিন্তু শরীয়তের পরিভাষায় সব ধরনের ধৌত করাকেই গোসল বলা হয় না, বরং পবিত্র পানি দ্বারা সমস্ত শরীর ধৌত করাকে গোসল বলা হয়। গোসল তিন প্রকার
(১) ফরজ গোসল
(২) সুন্নাত গোসল
(৩) মুস্তাহাবৰ গোসল।
যে কোরণে গোসল করা ফরজ:
• যৌন সম্ভোগ বা কামোদ্দীপনার সাথে বা হস্ত মৈথুন দ্বারা বীর্ঘপাত হলে।
* স্ত্রীলোকের গুপ্তাঙ্গের খতনার স্থান পর্যন্ত প্রবেশ করলে, বীর্যপাত হোক বা না হোক।
* দিবা নিশির যে কোন সময় ঘুমন্ত অবস্থায় বীর্যপাত হলে।
* মেয়েদের হায়েজ ও নিফাস বন্ধ হলে গোসল করা ফরজ।
হায়েজ ও নেফাসের পরিচয়:
হায়েজ বলা হয় স্বাভাবিক অবস্থায় প্রাপ্ত বয়স্কা নারীর রেহেম (গর্ভধার) হতে প্রতি মাসে কোন এক নির্দিষ্ট সময়ে তিন দিন, পাঁচ দিন বা সাত দিন ইত্যাদি দিন যে রক্তের ঝর্নাধারা যোনিপথ দিয়ে বের হয় তাকেই হায়েজ বা ঋতুস্রাব বলা হয়। এর সর্বোচ্চ সময় দশ দিন এবং সর্ব নিম্ন তিন দিন। নিফাস বলা হয় মহিলাদের গর্ভপাতের পর যে রক্তস্রাব হয় তাকে নিফাস বলে। নিফাসের সর্বোচ্চ সময় হল চল্লিশ দিন। কিন্তু এর সর্ব নিম্ন সময়ের কোন নির্দিষ্টসীমা নেই। কেননা কার এক দিন হয় কার তিন দিন। সাত দিন, দশ দিন, এমনকি এক দু'ঘন্টাও হয়ে তার পর ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায়। কাজেই এর কোন নিম্ন সময় নির্দিষ্ট নেই।
হায়েজ নিফাস ছাড়াও মহিলাদের রেহেম হতে যোনিপথ দিয়ে রক্ত পাত হয়। একে এস্তেহাজা বলা হয়। এটা মহিলাদের রোগের কারণে হয়ে থাকে। এস্তেহাজাহ ওয়ালী নারীর হুকুম আহকাম সুস্থ নারীর মতই।
হায়েজের মাসায়িল:
* যাদের প্রতি মাসে ঋতু স্রাবের কোন এক নির্দিষ্ট সময়ে আছে তাদের ঐ সময় শেষ হওয়ার সাথে সাথেই ওজু গোসল করে নামাজ ও ইসলামী জিন্দেগানীর অন্যন্য হুকুম আহকাম আরম্ভ করবে এবং যে নামাজের সময় বাকি থাকতে হায়েজ বন্ধ হবে ঐ নামাজকেই তার উপর আদায় করা ফরজ হবে। যদিও সেই সময় একেবারেই সল্প হউক।
* যে সকল মহিলাদের ঋতু স্রাবের কাল বিভিন্ন মাসের বিভিন্ন ধরনের হয়। যথাঃ কোন মাসে চার দিন কোন মাসে ছয় দিন ইত্যাদি। তখন তারা যে মাসে যত দিন রক্ত দেখবে ততদিন ঋতু কাল মনে করবে এবং নামাজ রোখা ও স্বামী সহবাস, কোরান তেলাওয়াত ইত্যাদি হতে বিরত থাকবে। এ প্রকারের মহিলাগণ যদি কোন মাসে দর্শদিনের বেশী রক্ত অবলোকন করে তবে সে পূর্ববর্তী মাসের নিয়মানুযায়ী হায়েজ ধরবে এবং বাকী দিনগুলোকে এস্তেহাজা মনে করতে হবে এবং ঐ দিন গুলোতে যে সকল নামাজ ছেড়ে দেয়া হয়েছে তার কাজা আদায় করতে হবে।
যদি কোন নারীর তিনদিন ঋতু হয়ে মাঝে পনের দিন ভাল থাকে এবং পনের দিন পর পুনরায় তিনদিন ঋতুস্রাব হয় তবে পূর্ব ও পরের উভয় তিনদিনকে হায়েজ ধরা হবে এবং মধ্যবর্তী পনের দিনকে তুহরের (পাক থাকার সময়) অন্তর্ভুক্ত করা হবে। কারো যদি নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে আর বেশী ঋতুস্রাব হয় তবে যদি তা দশদিনের পূর্বেই বন্ধ হয়ে যায়, তবে মনে করতে হবে যে তার মদ্দতের পরিবর্তনে এসে গেছে। আর যদি দশদিনেও বন্ধ না হয় তবে পূর্বের মাসের সমান দিন গুলোকে হায়েজ ধরে বাকী দিন গুলোকে এস্তেহাজা ধরতে হবে।
* কোন নারীর যদি প্রথম তিনদিন হায়েজ দেখা দেয় হঠাৎ এক মাসে মাসের প্রথম দিন রক্ত দেখা দিয়ে একাধারে চৌদ্দ দিন রক্ত বন্ধ রইল,এরপর পুনরায় একদিন রক্তস্রাব হল তখন এ দুই দিনের সাথে আরও এক দিন মিলিয়ে মোট তিন দিনকে হায়েজ ধরা হবে।
নিফাসের মাসয়ালা:
* যে সকল মহিলাদের নিফাসের কোন নির্দিষ্ট সময় নেই অর্থাৎ কোন বার পনের দিন কোন বার ত্রিশ দিন হয়ে থাকে। ঐ সকল মহিলার চল্লিশ দিন পর্যন্ত রক্ত স্রাবকে নিফাস মনে করবে। আর যদি চল্লিশ দিনের উপরে রক্তস্রাব হয় তখন এটাকে এস্তেহাজা বলা হবে।
* যদি কার নিফাসের নির্দিষ্ট সময় থাকার পর কখনও একাধারে চল্লিশ দিনের উপর রক্তস্রাব হয় তখন এ পর্বের নির্দিষ্ট সময়কে নিফাস মনে করে পরবর্তী দিন গুলোকে এস্তেহাজা মনে করতে হবে। স্বাভাবিক সন্তান প্রসব না হয়ে যদি লেংড়া, কানা, খোঁড়া, মৃত কিংবা শুধু একটি মাংসপিণ্ড কিংবা একটি পা বা হাত ইত্যাদি প্রসব হয় তখনও এর পর যেই রক্তস্রাব হবে তাকেও নিফাসের অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং নিফাসী মহিলার যে হুকুম তারও সে হুকুম প্রযোজ্য হবে।
হায়েজ নিফাস কালে যে সকল কাজ করা যায় না:
হায়েজ ও নিফাস বিশিষ্ট মহিলাদের জন্য কিছু কিছু কাজ করা সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। যদিও বাহিক্য দৃষ্টিতে সে কাজগুলো করা পূণ্যের হয়। তা নিম্নে দেয়া হল:
(১) নামাজ পড়া যাবে না।
(২) রোযা রাখা যাবে না।
(৩) কুরআন তিলাওয়াত করা যাবে না, উচ্চারণ না করে শব্দের বানান বলে দিতে পারবে আর মুনাজাতের আয়াত সমূহ পড়তে পারবে।
(৪) সেজদায় তেলওয়াত করা যাবে না।
(৫) বায়তুল্লাহ শরীফের স্পর্শ করা যাবে না।
(৬) কুরআন শরীফ স্পর্শ করা যাবে না।
(৭) মসজিদে প্রবেশ করা যাবে না।
(৮) কুরআনে কারীমের আয়াত বা সূরা লিখা সম্বলিত কোন কাগজও স্পর্শ করা যাবে না।
৯) স্বামীর সাথে সহবাস সম্ভোগ করা যাবে না। তবে একত্রে শয়নে কোনরূপ অসুবিধা নেই।
(১০) হায়েজ বা নিফাসের মুদ্দত অতিক্রান্ত হয়ে গেলে হায়েজ নিফাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর স্ত্রী গোসল করার পূর্বে স্বামীর সাথে সহবাস করতে পারবে না। তবে যদি এক নামাজের ওয়াক্ত অতিক্রান্ত হয়ে যায় তবে বিনা গোসলেই স্ত্রী সহবাস করা যাবে।
(১১) যদি কোন মহিলার হায়েজের নির্দিষ্ট সময় শেষ হওয়ার পূর্বেই হায়েজ বন্ধ হয়ে যায় তবে তার স্বামী হায়েজের সর্বোচ্চ সময় দশদিন অতিক্রম না হওয়া পর্যন্ত সে স্ত্রীকে ব্যবহার করতে পারবে না। কেননা হতে পারে কোন কারণ বশত রক্তস্রাব বন্ধ হয়ে গেছে। আর এটা তাৎক্ষণিক বোঝা সম্ভব নয়। তাই দশদিন অপেক্ষা করতে হবে।
(১২) কার নফল নামাজে হায়েজ আরম্ভ হলে সে ঐ নামাজ ছেড়ে দিবে। কিন্তু হায়েজ বন্ধ হওয়ার পর ঐ নামাজের কাজা আদায় করতে হবে। আর যদি কার ফরজ নামাজের মধ্যে হায়েজ আরম্ভ হয় তবে সে ঐ নামাজ ছেড়ে দিবে কিন্তু আর এর কাজা করতে হবে না।
(১৩) এস্তেহাজার মধ্যে নামাজ রোকা সবকিছুই করতে হবে। কেউ নামাজ রোজা ছেড়ে দিলে মস্তবড় গোনাহগার হবে।
সুন্নত গোসল:
চারটি কারণে গোসল করা সুন্নত।
(১) শুক্রবার দিন ছুবহে সাদেকের পরে জুমার নামাজের জন্য গোসল করা সুন্নত।
(২) উভয় ঈদের নামাজের জন্য।
(৩) হজ্জ শেষে আরাফার দিনে পশ্চিমাকাশে সূর্য ঢলে যাওয়ার পর গোসল করা সুন্নত।
(৪) গহজ্জের নিয়তে ইহ্রাম বাঁধার জন্য গোসল করা সুন্নত।
মুস্তাহাব গোসল:
একাধিক কারণে গোসল করা মুস্তাহাব।
১। পবিত্র অবস্থায় মুসলমান হওয়ার পর গোসল করা। তবে অপবিত্র অবস্থায় মুসলমান হলে গোসল করা ফরজ।
২। বয়সের হিসেবে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর।
৩। পাগলের সুস্থ হওয়ার পর।
৪। বেহুশ ব্যক্তির হুশ ফিরে আসার পর।
৫। নেশাগ্রস্ত ব্যক্তির নেশা দূর হওয়ার পর।
৬। হাজামত (ক্ষৌর কর্ম) এর পর।
৭। লাইলাতুল বরাত বা শবে বরাত ও শবে কদরে।
৮। মদীনা শরীফ প্রবেশকালে।
৯। ১০ই জিলহজ্জ ফরজ নামাজের পর মুয়দাফিফায় অবস্থানের জন্য।
১০। মক্কা শরীফ প্রবেশের জন্য।
১১। তাওয়াফে যিয়ারতের জন্য।
১২। কুসূফ, খুসুফ ও ইস্তেস্কার নামাজের জন্য।
১৩। গুনাহ হতে তওবা করার জন্য।
১৪। বিপদ আপদ ও মুসিবতের সময় নামাজ আদায়ের জন্য।
১৫। মুসাফিল ব্যক্তির বাড়িতে পৌঁছার পর।
১৬। ইস্তিহাজাহ্ বন্ধ হওয়ার পর।
গোসলের ফরজ তিনটি:
১। গড় গড়া সহ উত্তম রূপে কুলি করা। কিন্তু রোযাদার হলে গড় গড়া করবে না। ২। নাকের নরম হাড় পর্যন্ত পানি পৌঁছান। ৩। সমস্ত শরীর ভালভাবে ধৌত করা। যাতে শরীরের কোথাও এক চুল পরিমাণ জায়গা শুকন না থাকে যদি এ তিনটি জিনিসের কোন একটির সামান্যতম জায়গাতেও যদি পানি না পৌঁছে তবে তার ফরজ গোসল আদায় হবে না, এবং ঐ জাতীয় গোসলের পর নামাজ পড়লে নামাজও আদায় হবে না।
গোসলের সুন্নত:
পবিত্র গোসলের সুন্নত মোট ছয়টি
১। গোসলের নিয়তে উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধোয়া।
২। লজ্জাস্থান পরিষ্কার করা।
৩। কাপড় বা শরীরের কোন জায়গায় নাজাসাত লেগে থাকলে গোসলের পূর্বে তা ধৌত করা।
৪। গোসলের পূর্বে ওজু করা।
৫। সমস্ত শরীর তিনবার ধৌত করা।
৬। গোসলখানায় যদি পানি বা কাদা জমে থাকে তবে অন্য স্থানে সরে গিয়ে পা ধৌত করা।
গোসলের মুস্তাহাব:
গোসলের মুস্তাহাব আটটি
১। গোসলের নিয়ত করা।
২। গোসলের জন্য পরিমিত পানি ব্যবহার করা।
৩। শরীরকে ভাল ভাবে মর্দন করে গোসল করা।
৪। লোক চক্ষুর আড়ালে গোসল করা।
৫। উঁচু জায়গায় গোসল করা।
৬। গোসলে করার সময় কার সাথে কথা বার্তা না বলা।
৭। গোসলে বিনা ওজরে কার সাহায্য না লওয়া
৮। গোসল শেষে সমস্ত শরীর মুছে ফেলা।
অজুর বিবরণ:
অজু আরবী শব্দ। এর অর্থ হল হাতমুখ ধৌত করা। পরিচ্ছন্ন হওয়া অজু করা (আ কাউছার পৃঃ ৫৯৪) ইসলামের পরিভাষায় নামাজ কোরআন তেলাওয়াত বা অন্যান্য ইবাদত করা কিংবা সর্বদা পবিত্র অবস্থায় থাকার জন্য এক বিশেষ পদ্ধতিতে মুখমণ্ডল, হাত পা ইত্যাদি ধৌত করার নামই হল অজু। এ অজু ব্যতীত নামাজ হবে না। তাইতো হাদীসে অযুকে নামাজের চাবি বলা হয়েছে
مفتاح الجنة الصلوة ومفتاح المسلوة الطهور.
উচ্চারণ: মিফতাহুল জান্নাতি আচ্ছালাতু ওয়া মিফতাহয় জালাতি আততুহুরু।
অর্থ: বেহেশতের চাবি হচ্ছে নামাজ আর নামাজের চাবি হচ্ছে পবিত্রতা বা অজু।
অজু কিভাবে করতে হয়। প্রথমতঃ পবিত্র পানি সপ্তাহ করতে হবে অত্যপর-
بسمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
উচ্চারণঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।
অর্থ: পরম করুণাময় আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি। অতঃপর অজুর জন্য এভাবে নিয়ত করবে।
نويْتُ أَنْ أَتَو صَالِرَفْعِ الْمُدَتِ واستباحةللصلوة وتقربا إلى اللهِ تَعَالَى
উচ্চারণ : নাওয়াইতুআনু আতা ওয়াজ্জাআ পিরাফায়িল হাসাছি, ওয়া ইস্তেবাহ্যতান লিস সালাতি, ওয়া তাকাররুবান ইলাল্লাহি তায়ালা।
অর্থ: আমি নাপাকী বিদূরীত করা ও নামাজ বৈধ হওয়া ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য অজু করার নিয়ত করছি।
অতঃপর উভয় হাতের কব্জি পর্যন্ত তিন বার ধৌত করতে হবে। এক হাতের অঙ্গুলীকে অপর হাতের অঙ্গুলীর ভিতর ঢুকিয়ে খিলাল করবে এবং সম্ভব হলে ঐ সময় এ দোয়া পাঠ করবে।
بسْمِ اللهِ الْعَلِيُّ الْعَظِيمِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ عَلَى دِينِ حَقَّ وَالْكُفْرَ بَاطِلُ الإِسْلامُ نُور نور وَالْكُفْرُ الإسلام الإسلام . علمة
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহিল আলিয়্যিল আজীম। ওয়াল হামদু লিল্লাহি আলা দ্বীনিল ইসলাম। আল ইসলামু হাক্কুন ওয়াল কুফরু বাতিলুন। আল ইসলামু নূরুন ওয়াল কুফরু জুলমাতুন।
অর্থঃ সর্বশক্তিমান আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য তিনি আমাদের ধর্মকে ইসলাম মনোনীত করেছেন। এ জন্য, ইসলাম সত্য কুফর বাতিল, ইসলাম জ্যোর্তিময় আর কুফর আঁধারে পরিপূর্ণ।
এরপর তিনবার কুলি করতে হবে। আর রোযাদার না হলে কুলির সাথে গড়গড়া করবে এবং মিছওয়াক করবে। আর মিছওয়াক না থাকলে হাতের অঙ্গুলি দিয়ে দাঁত মর্দন করবে এবং সম্ভব হলে নিম্নোক্তএই দোয়া পাঠ করবে-
اللهم أعنى على تلاوة الْقُرْآنِ وَذِكْرِكَ وَشُكْرَكَوَحُسْنِ عِبَادَتِكَ -
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আয়িন্নী আ'লা তিলাওয়াতিল কুরআন, ওয়া জিকরিকা। ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনিই বাদাতিকা।
অর্থঃ হে, আল্লাহ্, তুমি তোমার কুরআন তেলাওয়াত, তোমার কৃতজ্ঞতা এবং তোমার সুন্দর ইবাদত করার ক্ষেত্রে আমায় সাহায্য কর বা আমায় শক্তি দাও।
এরপর ডানহাতে পানি নিয়ে তিন বার নাকে পানি টেনে নিতে হবে এবং বাম হাতের কনিষ্ঠা অঙ্গুলি দ্বারা নাকের ভিতর পরিষ্কার করবে। যদি রোযাদার হয় তবে সে নাকে পানি টানবে না বরং তখন হাত দিয়ে ঢেলে দিলে যতটুকু যায় তাই যথেষ্ট এবং সম্ভব হলে এ দোয়া পাঠ করবে।
اللهم أرحنِى رَائِحَةَ الْجَنَّةَ وَلَا تُرِحْنِى رائحةالنار -
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আরিনী রালয় হাতা জান্নাতি, ওয়ালা তুরিহনী রায়ে হাতান নারি।
অর্থঃ হে প্রভু। আমার আপনি বেহেশেতের ঘ্রান লওয়ার তওফিক দিন এবং জাহান্নামের দুর্গন্ধ থেকে আমায় হিফাজত করুন।
এরপর সমস্ত চেহারাকে তিন বার ধৌত করতে হবে। তার সীমা হল কপালের চুলের গোড়া হতে থুতনীর নিচ পর্যন্ত এবং উভয় কানের লতী পর্যন্ত। যদি কার দাড়ি ঘন হয় তখন সে দাড়িতে আঙ্গুল প্রবেশ করিয়ে তা খেলাল করবে এবং সম্ভব হলে এ দোয়া পাঠ করবে।
اللهم بيض وجهي يَوْمَ تَبْيَضُ وجوه وتسود وجوه
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা বাইয়িদ ওয়াজহী ইয়াওমা তাবইয়াদ্দু উজুহুন ও তাস ওয়াদু উদ্বুহুন।
অর্থঃ প্রভূ হে! তুমি আমার চেহারাকে রওশন কর সেদিন, যেদিন কতেক মুখমণ্ডল উজ্জ্বল আলোকিত হবে। আর কতেক হবে কৃষ্ণবর্ণের। এর তিনবার ডানহাতে কুনই সহ ধুবে এবং ডান হাতকে হাম দ্বারা ভাল করে মর্দন করবে আর সম্ভব হলে এ দেয়া পড়বে।
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আ'তিনী কিতাবী বিয়ামীনী ওয়া হাসিবনী হিসাবাই য়াসীরান।
اللهم أعطني كتابي بيميني وحاسبني حِسَابًا يسيرا -
অর্থঃ ওহে, পরওয়ারদেগার! তুমি আমার আমলনামা আমার ডান হাতে প্রদান কর ও আমার থেকে সহজ ভাবে হিসেব গ্রহণ কর। এরপর অনুরূপ ভাবে বাম হাত ধুবে তিনবার এবং এ দোয়া পাঠ করবে যদি সম্ভব হয়।
اللهم لا تعطني كتابي بشمالي والأمن وراءظهري
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা লাতু'তিনী তিাবী বিশিমালী ওয়া রঅ মিন ওয়ারায়ি জাহরী।
অর্থঃ হে আমার প্রভু। তুমি আমার আমলনামা আমার বাম হাতে দিওনা। আর আমার পশ্চাতেও নয়।
অতঃপর সমস্ত মাথা একবার মাছাহ্ করতে হবে এবং মাছাহর সাথে কান ও গর্দানকেও মাছাহ্ কবে এবং মাছের সময় এ দোয়া পড়া ভাল।
اللهم أظلني تحت ظل عرشك يوم لاظل الأظل عرشك
উচ্চারণ : আল্লাহুমা আজিপ্তানী তাহ্তা জিপ্তি আরশিকা ইয়াওমা লা-জিল্লাইল্লা জিল্লু আরশিক।
অর্থঃ হে আল্লাহ। তুমি আমার তোমার আরশের ছায়াতলে ছায়া প্রসান কর সেদিন, যেদিন তোমার আরশের ছায়া ব্যতীত অন্য কোন ছায়া থাকবে না
এবং কান মাজাহর সময় এ দোয়া পড়বে যদি সম্ভব হয়।
اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ الَّذِينَ يَسْتَمِعُونَ الْقَوْلُ فَيَتَّبِعُونَ أَحْسَنَه
উচ্চারণ : আল্লাহুমাজ আলনী মিনাল্লাজীনা ইয়াসতামিউনাল স্কুওলা ফাওয়ায়াত্তাবিউনা আহসানাহু।
অর্থঃ হে প্রতি পালক। যারা আপনার কথা শুনে তাকে ভালভাবে অনুস্মরণ করে আমায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করুন এবং গর্দান মাঙ্কাহ্ করার সময় এ দোয়া পড়া ভাল বা মুস্তাহাব।
اللهم اعتقُ رَقَبَتِي عَنِ النَّارِ -
অর্থঃ হে আল্লাহ। তুমি আমার গর্দানকে জাহান্নামের অগ্নি হতে মুক্তরাখ। এরপর উভয় পা টাখনুগিরাসহ দৌত করবে প্রথমে ডান পা ধুইবে এবং পড়বে।
اللهم ثبت قدمي على الصراطِ يَوْمَ تَزِلُ الأَقْدَامُ - উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ছাব্বাতি জ্বাদামী আলাস সিরাতা ইয়াওমা তাকিলুল আকুলাম।
অর্থঃ হে আল্লাহ্। আমার পা সুদৃঢ় রাখ সিরাতের উপর সেদিন যেনিদ সেখান হতে বহু পা পিছলে যাবে, এবং বাম পা ধোয়ার সময় এই দোয়া পড়বে।
اللَّهُمَّ اجْعَلْ ذَنْبِي مَغْفُورًا وَسَعْيِي مَشْكُورًاوَتِجَارَتِي لَنْ تَبُور
উচ্চারণঃ আল্লাহুমাজ আল জাম্বী মাগফুরান ওয়া সা'য়ী মাশকুরান ওয়া তিজারাতীলান তাবুরা।
অজু শেষে আকাশের দিকে তাকিয়ে এ দোয়া পাঠ করতে হবে।
أَشْهَدُ أن لا إله إلا الله وحده لا شَرِيكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ محمدًاعَبْدُهُ وَرَسُولُه
উচ্চারণ : আশহাদু আল্লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু ওয়াআশ হাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু।
অর্থঃ আমি স্বাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই তিনি এক তাঁর কোন শরীক বা অংশিদার নেই এবং আমি আরও স্বাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মদ (স) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।
যে ব্যক্তি অজুর শেষে উপরোক্ত দোয়া পড়ে তার জন্য বেহেশতের আটটি দরজা খোলা থাকবে। সে যে দরজা দিয়ে ইচ্ছে প্রবেশ করবে। (মিশকাত পৃঃ ৩৯)।
পাবলিশের অর্গানিজেশন সিয়াম হাসান নিউস লিমিটেড