(toc)
যে সকল জিনিস দ্বারা কুলুখ অবৈধ:
লোহা, তামা-পিতল, স্বর্ণ, রৌপ্য, কয়লা, চুলা, মসজিদের মাটি, গৃহের দেয়াল, কাঁচা ঘাস, কাঁচা কুটা, কাঁচা পাতা, চুল, গোঁফ, মানুষের কোন অঙ্গ, কাগজ, ফল-মূল, তরতিরকারী, হারাম বা হালাল জন্তুর মাংস বা তাদের পশম বা চামড়া হাডিয় কিংবা শিং এবং যে ঢিলা বা টয়লেট পেপার কে একবার ব্যবহার করা হয়েছে তাকে পুনরায় ব্যবহার করা অবৈধ ও মাকরুহ।
তদ্রুপ দুধ, খেজুর রস, ভাবের পানি, তালের রস, ইক্ষুর জোস, তৈল, ভালডা, বি, সিরকা প্রভৃতি দ্বারাও ইস্তিঞ্জা করা নাযায়েজ।
অজুর প্রকার ভেদ:
অজু তিন প্রকারঃ
(১) ফরজ অজু, যথাঃ নামাজ আদায় করার জন্য অজু করা ফরজ।
(২) ওয়াজিব অজু যথাঃ বায়তুল্লাহ শরীফের তাওয়াফের জন্য অজু করা ওয়াজিব।
(৩) মুস্তাহাব অঞ্জু যথা: পবিত্র অবস্থায় অজু করা, ঘুমানর জন্য অজু করা, এবং মৃত ব্যক্তিকে গোসল করানর পর অজু করা।
তায়াম্মুমের বিবরণ:
তায়াম্মুম আরবী শব্দ। এর অর্থ হল ইচ্ছে করা। কিন্তু শরীয়তের পরিভাষায় মাটি বা মাটি জাতীয় দ্রব্য দ্বারা এক বিশেষ পন্থায় পবিত্রতা অর্জনের ইচ্ছে করাকে তায়াম্মুম বলা হয়। তায়াম্মুম শুধুমাত্র উম্মতে মোহাম্মদীর জন্য বৈধ করা হয়েছে যা অজু ও গোসলের প্রতিনিধি। তবে অজু ও গোসলে তায়াম্মুম করার নিয়ম পদ্ধতি একই। শুধু কেবল নিয়ত পরিবর্তন করতে হবে। নামাজের জন্য তায়াম্মুম করলে ঐ তায়াম্মুম দ্বারা কোরআন পড়া যাবে। কিন্তু কুরআন পড়ার জন্য তায়াম্মুম করলে তা দ্বারা নামাজ পড়া যাবে না, বরং নামাজের জন্য আলাদা তায়াম্মুম করতে হবে।
তায়াম্মুম কিভাবে করতে হয়:
প্রথম তায়াম্মুমের নিয়ত করবে যে-
نويْتُ أَنْ أَتَيْتُم لرفع الحدث واستباحة للصلوة وَتَقَرَّبَا إِلَىاللَّهِ تَعَالَى
উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন আতায়াম্মামা লির যয়ীল হদছি,
এটি, গৃদ্ধে ওয়াইসতিবাহাতাল লিছ ছালাতি। ওয়া তাকারুবান ইলাল্লাহি তায়ালার অর্থ: আমি বড় ও ছোট নাপাক দূর করার জন্য এবং নামাজ বৈধ হওয়ার বা তাদের জন্য এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য তায়াম্মুমের নিয়ত করছি। নিয়ত পপার যে করার পর বিসমিল্লাহ বলে পবিত্র মাটি বা মাটি জাতীয় দ্রব্যের উপর হাত রেখে হাতকে সামনে ও পিছনের দিকে টানবে। অতঃপর উভয় হাতকে মাটির থেকে উঠিয়ে উভয় হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলী দ্বারা পরস্পর পরস্পরকে সামান্য আঘাত করবে যাতে করে অতিরিক্ত ধুলা লাগবে তা যেন পড়ে যায়। এরপর সমস্ত মুখমণ্ডল একবার মাসাহ করবে এবং দাড়ি থাকলে তা খেলাল করবে। অতঃপর পুনরায় উভয় হাতকে মাটিতে পূর্বে ন্যায় মেরে ঝেড়ে নিয়ে প্রথমে ডানহাত দ্বারা বামহাত অতঃপর বাম হাত দ্বারা ডানহাত মাসাহ করবে। হাতে চুরি, ঘড়ি থাকলে তা নাড়াচাড়া করতে হবে এবং যদি আংটি থাকে তবে তা খুলে নিতে হবে।
কোন অবস্থায় তায়াম্মুম করা বৈধ:
এক মাইলের মধ্যে পানি না পেলে, কিংবা পানির স্থানে কোন হিংস্র প্রাণী বা ক্ষতিকর প্রাণী থাকলে অথবা পানির স্থানে এমন কোন শত্রু থাকলে যে তার কাছে গেলে জানমাল ইত্যাদির ক্ষতির আশংকা রয়েছে। তখন
তায়াম্মুম করা বৈধ।:
অসুস্থ অবস্থায় পানি ব্যবহারের প্রতি অক্ষম হলে অথবা পানি ব্যবহার করলে মৃত্যু রোগ বৃদ্ধি কিংবা রোগ সৃষ্টির আশংকা থাকলে তায়াম্মুম করা বৈধ।
* কূপ আছে কিন্তু পানি উঠানোর ব্যবস্থা নেই, সাথীর কাছে পানি আছে কিন্তু সে দিচ্ছে না, বা পানি যে পরিমাণে আছে তা দ্বারা অজু গোসল করলে পিপাসায় কষ্ট পাবার আশংকা আছে। কিংবা খাদ্য পাকানোর ক্ষেত্রে পানির সংকটের আশংকা থাকলেও তায়াম্মুম করা জায়েজ আছে।
* উভয় ঈদের নামাজ কিংবা জানাজার নামাজ সম্পূর্ণ রূপে ছুটে যাওয়ার ভয় হলে (তবে মৃতের অবিভাবক হলে পারবে না) তায়াম্মুম করে নামাজ আদায় করতে পারবে আর যদি অজু করে এ সকল নামাজগুলো। কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তবে তায়াম্মুম করে নামাজ আদায় করা জায়েজ হবে না।
* যানবাহনের আরোহানবস্থায় যদি পানি না পাওয়া যায় এবং পানি খুঁজতে গেলে গাড়ি ছেড়ে দেয়ার ভয় থাকলে এবং যাত্রা অনেক দূরের হলে এবং সে পথ অতিক্রম করার আর কোন ব্যবস্থা না থাকলে তায়াম্মুম করা জায়েজ হবে।
* যদি পানি কিনতে পাওয়া যায় কিন্তু কেনার মত পয়সা তার না থাকলে তার জন্য তায়াম্মুম করা জায়েজ অথবা পানির মূল্য অত্যন্ত চড়া হলে ক্রয় করা ওয়াজিব নয় বরং তখনও তায়াম্মুম করা জায়েজ।
* প্রথম ওয়াক্তের পর যদি পানি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তবে মাকরুহ ওয়াক্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করা উত্তম। পানির অপেক্ষা না করে প্রথম ওয়াক্তে তায়াম্মুম করে নামাজ আদায় করলে নামাজ হয়ে যাবে কিন্তু যদি ওয়াক্তের মধ্যেই পানি পাওয়া যায় তবে তাকে পুনরায় অজু করে নামাজ আদায় করতে হবে।
কোন বস্তু দিয়ে তায়াম্মুম করতে হয়:
তায়াম্মুমের জন্য মাটি বা মাটি জাতীয় বস্তু হওয়া আবশ্যক। যথাঃ পাথর, কংকর, চুনা, ইট ইত্যাদি দ্বারা তায়াম্মুম করা যাবে।
* কাঠ, লৌহ, পিতল, চামড়া, কাপড় ইত্যাদির উপর যদি এ পরিমাণ ধূলা জমে থাকে যে তাতে হাত ফেললে হাতে ধুলা লেগে যায় তবে ঐ সকল বস্তুর দ্বারাও তায়াম্মুম করা জায়েজ।
*পাথর সম্পূর্ণ ধুলা মুক্ত হলে উহার উপর তায়াম্মুম করা জায়েজ।
তায়াম্মুমের ফরজ সমূহ:
তায়াম্মুমের ফরজ তিনটি,
(১) নিয়ত করা
(২) সমস্ত মুখমণ্ডল মাসাহ করা (যতটুকু ওজুতে ধুতে হয়)
(৩) উভয় হাতের কনুই সহ মাসাহ করা। উল্লেখ্য যে এর থেকে কোন একটি বা তার কিয়দাংশ বাকি থেকে গেলে তায়াম্মুম বৈধ হবে না এবং ঐ তায়াম্মুম দ্বারা নামাজ ও কোরআন স্পর্শ ও করতে পারবে না।
তায়াম্মুমের সুন্নত সমূহ:
তায়াম্মুমের সুন্নত সাতটি, যথাঃ
(১) তায়াম্মুমের শুরুতে বিসমিল্লাহ ফলা,(২) উভয় হাতের তালু মাটিতে রেখে সামনে ও পিছনে এক বার টানা, (৩) মাটিতে হাত রাখার সময় আঙ্গুলগুলো একটু ফাঁক করে রাখা, (৪) মাটি হতে হাত উঠানর পর একটু ঝাড়া, (৫) প্রথমে মুখ ও পরে উভয় হাত মাসাহ করা, (৬) মুখ মণ্ডল ও উভয় হাত মাসাহ করার মাঝে বিলম্ব না করা এবং (৭) তরতীব ঠিক রাখা।
তায়াম্মুম ভঙ্গের কারণ:
* যে সকল কারণে অজু ভঙ্গ হয় ঐ কারণগুলোতে তায়াম্মুম ও ভেঙ্গে যায় এবং যে সকল কারণে গোসল ফরজ হয় তাতেও তায়াম্মুম ভেঙ্গে যায়।
• পানি পাওয়া গেলে তায়াম্মুম ভঙ্গ হয়ে যায়।
* পানি ব্যবহার করার অক্ষমতা দূর হয়ে গেলেও তায়াম্মুম ভেঙ্গে যায়।
মুজার উপর মাসাহ করা বর্ণনা:
যদি কেউ পায়ে চামড়ার মোজা পরিধান করে তবে তার জন্য মুজার উপর পা ধোয়ার পরিবর্তে মাসাহ করা বৈধ হবে। কেননা হাদীসে এসেছে যে
নবী করীম (স) মুজার উপর মাসাহ করেছেন।
أنَّهُ عَلَيْهِ السلامُ أتى إلى سُبَاطَةِ قَوْمٍ فَبَالَ وتوضاً وَمَسَحَ عَلَى خَفَيْهِ -
উচ্চারণঃ ইন্নাহু আলাই হিস্সালাম আতা ইলা সুবাতাতি কুওমিন ফাবালা ওয়া তাওয়াদ্দা আ ওয়া মাছাহাআলা খুফফাইহি।
অর্থঃ হুজুর (স) কোন এক সম্প্রদায়ের ময়লা আবর্জনার স্থানে আসলেন। অতঃপর পেশাব করলেন, অজু করলেন এবং উভয় মুজার উপর মাসাহ করলেন।
যদি কোন ব্যক্তি সম্পূর্ণ অজু করার পর মুজা পরিধান করে তখন অজু ভাঙ্গার পর হতে ঐ ব্যক্তি যদি মুকীম হয় তবে একদিন একরাত পর্যন্ত মুজার উপর মাসাহ করতে পারে আর যদি মুসাফির হয় তবে তিন দিন তিন রাত পর্যন্ত মাসাহ করতে পারবে। তবে যদি কার গোসল ফরজ হয় তবে সে মুজার উপর মাসাহ করলে হবে না। বরং তাঁকে মুজা খুলে পা ধুতে হবে।
মাসাহ করার নিয়ম:
হাতের আঙ্গুল ও পায়ের আঙ্গুলগুলোকে ভিজিয়ে পায়ের আঙ্গুল হতে টেনে টাখন পর্যন্ত নিয়ে আসলেই মুজা মাসাহ হয়ে যাবে। পায়ের উপরি ভাগেই মাসাহ করা পায়ের তলায় নয়।
মুজা মাসাহ্ ভঙ্গের কারণ:
যে সকল কারণে ভঙ্গ হয়ে যায় ঐ সকল কারণে মুজা মাসাহ্ও শেষ হয়ে যায় এবং মুজা খুলে ফেললে বা মুজার ভিতর পানি ঢুকলে বা মুজা মাছাহের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে বা মুজা এ পরিমাণ ফেটে গেলে যে, তার দ্বারা পায়ের ছোট তিন আঙ্গুলের সমান বা বেশী হয়ে আসে শুধুমাত্র পা ধুয়ে নিলেই চলবে নতুন করে অজু করতে হবে না।
শরীয়তের হুকুমের বর্ণনা:
কুরআন ও হাদীসে যে সকল কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে এবং যে সকল কাজ করতে নিষেধ করেছে তাকে শরীয়তের হুকুম বলে। এটা মোট আট প্রকার। যথাঃ
(১) ফরজ
(২) ওয়াজিব
(৩) সুন্নত
(৪) নফল
(৫) মুস্তাহাব
(৬) হারাম
(৭) মাকরুহ এবং
(৮) মোবাহ্ বা জায়েজ।
ফরজের বিবরণ:
আল্লাহতায়ালার পক্ষ হতে যে সকল কাজ করার জন্য বান্দার প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাকে ফরজ বলা হয়। ফরজ তরক কারীকে ফাসিক বলা হয়। ফাসিকের জন্য আখেরাতে রয়েছে মর্মন্তদ শাস্তি। ফরজের অস্বীকারকারী কাফের। এ ফরজটা আবার দু'ভাগ বিভক্ত। যথাঃ (১) ফরজে আইন, (২) ফরজে কেফায়াহ্।
ফরজে আইন:
যে হুকুম সমস্ত প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ সকলের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য এবং প্রত্যেকেই আলাদা আলাদাভাবে আদায় করতে হয়। অন্যথায় গোনাহগার হবে। যথাঃ নামাজ, রোযা হজ্জ জাকাত ইত্যাদি।
ফরজে কেফায়াহ:
যে হুকুম সমস্ত মানুষের জন্য প্রয়োজ্য কিন্তু তাদের থেকে কিছু লোকে আদায় করে ফেললেই গোনাহ্ হতে পরিত্রান পেয়ে যাবে। আর যদি কেউ আদায় না করে তবে সকলেই সমভাবে গোনাহগার হবে। যেমনঃ জানাযায় নামাজ, জেহাদ, তাবলীগ ইত্যাদি ফরজে কেফায়ার অন্তর্ভুক্ত।
ওয়াজিবের বিবরণ:
আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের পক্ষ হতে কোন কাজের সুস্পষ্ট হুকুম আসাকে বলে। ফরজের ন্যায় এটাও অবশ্যই পালনীয়। তবে ফরজ ও ওয়াজিবের মধ্যে পার্থক্য হল ফরজকে অস্বীকার করলে কাফের হবে। আর ওয়াজিবকে অস্বীকার করলে কাফের হবে না, বরং ফাসেক হবে। যথা বিতরের নামাজ উভয় ঈদের নামাজ, কুরবানী করা, ফেৎনা প্রদান ইত্যাদি।
সুন্নতের বিবরণ:
যেসব কাজ নবী করীম (স) নিজ থেকে করেছেন এবং সাহাবীগণও করেছেন তাকে সুন্নত বলা হয়। সুন্নত দু প্রকার: (১) সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ্ (২) সুন্নাতে গায়রে মুয়াক্কাদাহ্ বা যায়েদাহ।
সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ:
যে কাজ নবী করীম (স) নিয়মিতভাবে করেছেন। কোন কারণ ছাড়া তরক করেননি এবং সাহাবায়ে কেরামদের কেউ তা করার জন্য আদেশ করেছেন সাহাবাগণ ও তা নিয়মিত আদায় করেছেন এবং কোন কারণ ছাড়া তা তরক করেননি গুরুত্বের দিক থেকে এটা ওয়াজিবের সমমানের। কারণ ছাড়া এটা তরক করলে গোনাহগার হবে। যথা আযান, ইকামত, ফজরের পূর্বে দু রাকাত সুন্নত ইত্যাদি।
সুন্নাতে যায়েদাহ:
যে সব কাজ নবী করীম (স) ও সাহাবায়ে কেরামগণ করতেন কিন্তু অনিয়মিত ভাবে এবং অনেক সময় কোন কারণ ছাড়াও তা পরিত্যাগ করতেন তাকে সুন্নাতে গায়রে মুয়াক্কাদাহ্ বা যায়েদাহ্ বলে। এগুলো করলে অনেক ছওয়াব পাওয়া যাবে। কিন্তু ছেড়ে দিলে কোন গোনাহ্ হবে না। যথাঃ আছরের পূর্বে চার রাকাত সুন্নাত নামাজ।
মুস্তাহাবের বিবরণ:
সে সব কাজ মহানবী (স) ও তাঁর সাহাবাগণ কখন করেছেন কিন্তু অধিকাংশ সময়ই তা করেননি তাকে মুস্তাহাব বলা হয়। এগুলোতে ছওয়ার আছে, কিন্তু না করলে কোন গোনাহ নেই। যথাঃ ঘুমানোর পূর্বে অজু করা কিংবা সর্বদা পবিত্র থাকার নিয়াতে অজু করা ইত্যাদি।
নফলের বিবরণ:
নফল মুস্তাহাবের মতই। এগুলো করলে ছওয়াব পাওয় যায়। কিন্তু দা করলে কোন গোনাহ্ নেই।
হারামের বিবরণ:
যে সব কাজের ব্যাপারে শরীয়ত সুস্পষ্ট ভাবে নিষেধ করে দিয়েছে তাকে হারাম বলে। হারাম কাজ করলে ফাসিক ও গোনাহগার হবে। কিন্তু হারামকে অস্বীকার কিংবা হালাল মনে করলে সে কাফির হয়ে যাবে। যথা। চুরি করা, ডাকাতি করা, ছিনতাই করা, শুকরের গোশত খাওয়া, অঙ্গিকার ভেঙ্গে দেয়া, মা-বাবার নাফরমান হওয়া, স্বামীর হক নষ্ট করা, নামাজ ছেড়ে দেয়া ইত্যাদি হারাম কাজের অন্তর্ভুক্ত।
মাকরুহের বিবরণ:
কোরআনে করীমের অস্পষ্ট আয়াত দ্বারা যে সব কাজকে নিষেধ করা হয়েছে তাকে মাকরুহ বলে। মাকরূহ আবার দু প্রকার। যথাঃ
(১) মাকরুহে তাহরীমী
(২) মাকরুহে তানযিহী।
মাকরুহে তাহরীমী:
এটা প্রায় হারামের সমপর্যায়, তবে উভয়ের মধ্যে পার্থক্য হল। মাকরুহের তাহরীমীকে অস্বীকার করলে বা হালাল মনে করলে সে কাফের বা মুরতাদ হবে না, বরং ফাসিক হবে, তবে মাকরুহে তাহরীমী কাজগুলো আদায় করলে গুনাহগার হবে।
মাকরুহে তানযিনী:
এর থেকে বেঁচে থাকাটা ভাল ও বাঞ্ছনীয়। তবে হঠাৎ করে ফেললে কোন গোনাহ্ হবে।
মুবাহের বিবরণ:
মুবাহ্ এমন সব কাজকে বলা হয় যেগুলোর ব্যাপারে শরীয়তের কোন বিধিনিষেধ নেই। তা করলেও ছওয়াব নেই আর না করলেও গোনাহ নেই বা কোন বিধি নিষেধ নেই। যথাঃ পানাহার করা, ব্যবসা-বাণিজ্য করা, দেশ ভ্রমণ করা ইত্যাদি তবে এ কাজগুলো যদি ভাল নিয়তে করা হয়। তখন নিয়তের কারণে তাতে ছওয়াব পাওয়া যাবে। আর যদি খারাপ নিয়তে করা হয় তবে গোনাহগার হবে। যথাঃ কেউ যদি পানাহার করে বেশী বেশী ইবাদত করার জন্য তবে এতে তার ছওয়াব হবে। আর যদি ভাল খাদ্য গ্রহণ করে, চুরি ডাকাতি, ছিনতাই কিংবা খেলাধুলা করার জন্য তবে তাতে গোনাহ হবে। তদ্রুপ কেউ যদি দেশ ভ্রমণ করে তাবলীগে ইসলাম করার জন্য তবে তাতে ছওয়াব হবে আর নাচ গান বা খেলা দেখার জন্য ভ্রমণ করে তবে তাতে গোনাহ্ হবে।
পাবলিশার অর্গানাইজেশন সিয়াম হাসান নিউজ লিমিটেড