(toc)
আল্লাহর পরিচয়:
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্। তিনি ছাড়া নেই কোন উপাস্য। তিনি আদি, তিনিই অনন্ত, তিনি ছিলেন! থাকবেন। তার সত্ত্বা ব্যতীত সব কিছুই ধ্বংসমীল। তিনি সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী।তার রাজত্ব আসমান-জমীন পরিব্যাপ্ত। তিনিই তথা জীবনদাতা। তিনি তথা মৃত্যুদাতা। তিনি রিযিকদাতা, অন্নদাতা। সকল বস্তু তার মুখাপেক্ষী।
তিনিই কেবল অমুখাপেক্ষী।তার নির্দেশেই পরিচালিত আকাশ পাতালের সকল কিছু।তিনিই কেবল অমুখপেক্ষী।তার নির্দেশেই পরিচালিত আকাশ পাতালের সকল কিছু।তিনি খালেক। তিনি সৃষ্টি করেছেন মানব-দানব, মালায়িকা-ফেরেশতা, পশু-পাখি, নদী-নালা, পাহাড়-পর্বত, কীট-পতঙ্গ ইত্যাদি সকল কিছু
তাওহীদ:
আল্লাহ্ এক অদ্বিতীয়।তার সমকক্ষ কেউ নেই। একথা সর্বজন স্বীকৃত, তার একত্ববাদের প্রমাণের জন্য কোন দলীলের প্রয়োজন নেই।বিনা দলীলে তিনি এক অদ্বিতীয়। কারণ আমরা দেখি সুবিশাল পৃথিবী।এতে বাস করে অসংখ্য প্রাণী। উষালগ্নে পূর্ব গগনে ভোরের রবি উদিত হয়।
ধীরে ধীরে তার আলোকবর্তিকায় ছেয়ে যায় গোটাদেশ।এক সময় এর দাহনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠে মন।সন্ধ্যায় সে সূর্য আবার নিস্তেজ হয়ে পড়ে।পশ্চিম গগনে লালিমার প্রলেপ দিয়ে চুপিসারে পলায়ন করে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে।আঁধারে ছেয়ে যায় গোটা ভূমি।
একটু পরে জ্বলজ্বল করে জ্বলে উঠে মাহতাব।তার মায়াবী কিরণ কেড়ে নেয় আমাদের হৃদয়।নদীর পারে বাড়ির ছাদে উপভোগ করি সে আলো।
দেখতে দেখতে তার চতুষ্পার্শ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দৃষ্টিগোচর হয় অসংখ্য তারকারাজি।রাত গভীর হয়। ধীরে ধীরে চন্দ্র প্রস্থানের প্রস্তুতি নেয়।নক্ষত্র রাজি আত্মগোপন করে আপন আপন কক্ষপথে।আবার আগমন ঘটে দিনের রবি।এমনিতেই চলে আসছে পৃথিবীর প্রতিনিয়ত রুটিন।
আমরা দেখি, আমাদের চারিপাশে অসংখ্য যানবাহন। নদী-পথের, স্থল পথের আকাশ-পথের।আমরা দেখেনি কোন গাছ নিজে নিজে কাঠ হয়ে পৌহের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে মানুষকে পারাপার করছে।দেখিনি কোন স্কুল যানকে কোন চালক ছাড়া স্বেচ্ছায় নগর ভ্রমণ করছে। গুলিনি কোন বিমানকে যে কোন উপকরণ ছাড়া নিজে নিজেই আকাশে উড়ছে।বরং, আমরা দেখি মানুষ করাতে চিরে গাছ দিয়ে বানায় কাঠ, লাগায় পেরেক, ভাসায় পানিতে।এরপর হাতে বৈঠা নিয়ে, লগি নিয়ে একজন ধাক্কা দিলে নৌকা ভেসে চলে পানিতে আর এভাবেই মানুষ নৌকা করে পৌঁছতে পারে আপন গন্তব্যে।
আমরা আরও দেখতে পাই যে সকল যানগুলো আকাশ-পথে বা স্থল-পথে চলাচল করে সেওলো কিন্তু একাকী চলতে পারে না।বরং এরও চলার জন্য প্রয়োজন হয় একজন চালকের।চালক ব্যতীত কিস্মনকালেও তা আপন গন্ত্যবে পৌছতে পারে না। যদি কোন সময় চলেও তবু তখনই তা দুর্ঘটনা কবলিত হয়।এমনকি অদক্ষ চালক হলেও অনেক সময় যানগুলো এক্সিডেন্ট হয়।
প্রিয় পাঠক।আমরা উপরোক্ত বক্তব্যের সাথে নিশ্চয় কেউ দ্বিমত পোষণ করতে পারবেন না।তাহলে বলুনতো এ চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-তারা ইত্যাদি সকল কিছু যা আপন কক্ষপথে পরিচালিত।যারা লক্ষ লক্ষ বছর যাবৎ স্বীয় দায়িত্ব সঠিকভাবে আঞ্জাম দিয়ে আসছে-এদের কি কোন পরিচালকের প্রয়োজন নেই? নিশ্চয় আছে।আর সেই পরিচালকই হলেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন।
নিশ্চিত আল্লাহ এক :
নিশ্চয় আল্লাহ এক, যার কোন শরীক নেই। তার মত কেউ নেই। কেউ তার সমতূল্যও নয়। কিছু তাঁকে অক্ষয় করতে পারে না। তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ্ নেই। তিনি অনাদি, যার কোন আদি নেই। তাঁর ক্ষয় নেই, ধ্বংস নেই।
তার ইচ্ছা ব্যতীত কোন কিছু সংঘটিত হয় না। কেননা তার ধারে কাছে পৌঁছে না। আর জ্ঞান তাকে উপলব্ধি করতে অক্ষম। সৃষ্ট বস্তু তার সাদৃশ্য হতে পারে না। তিনি চিরঞ্জীব, যার মৃত্যু নেই। তিনি চির জাগ্রত, যার নিদ্রার প্রয়োজন নেই। তিনি সাহায্য অনাপক্ষ সৃষ্টিকর্তা। অক্লান্ত রিযিক দাতা। তিনি নির্ভয়ে প্রাণ সংহারকারী। আর নির্বিবাদে পুনরুত্থানকারী। সৃষ্টির বহু পূর্বেই তিনি তাঁর অনাদি গুণাবলীসহ বিদ্যমান ছিলেন, আর সৃষ্টির কারণে তাঁর কোন নতুন গুণের সংযোজন ঘটেনি।
তিনি তাঁর গুণাবলীসহ যেমন অনাদি ছিলেন। তেমনি তিনি স্বীয় গুণাবলীসহ অনন্ত থাকবেন। সৃষ্টির কারণে তার গুণবাচক নাম খালিক-যার অর্থ সৃষ্টিকর্তা হয়নি। কিংবা বিশ্ব জাহান সৃষ্টির কারণে তার ছিফাতী নাম নারী যার অর্থ উদ্ভাবক হয়নি। প্রতিপাল্যের অবিদ্যমানতায়ও তিনি ছিলেন 'রব' যার অর্থ প্রতিপালক আর মাখলুক সৃষ্টির পূর্বেও তিনি ছিলেন খালিক যার অর্থ সৃষ্টিকর্তা। মৃতকে জীবন দান করার ফলে তাকে যেমনিভাবে জীবন দানকারী বলা হয়ঃতদ্রুপ জীবন দান করার পূর্বেও তিনি এ নামের হকদার ছিলেন। অনুরূপভাবে তিনি সৃজন ছাড়াই তিনি সৃষ্টিকর্তার নামের হক্কদার।
এটা এজন্য যে, তিনি সর্ববিষয়ে সর্ব শক্তিমান। প্রতিটি সৃষ্টি তার অনুগ্রহের ভিখারী। সবকিছুই সৃষ্টি করেছেন। আর তাদের জন্য সব কিছুরই পরিমাণ নির্ধারণ করেছেন। আর তাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন মৃত্যুর সময়। সৃষ্ট জীবের সৃষ্টির পূর্বে কোন কিছুই তার অজ্ঞাত ছিল না। জীব জগতের সৃষ্টির পূর্বেই তাদের সৃষ্টির পরবর্তীকালের কার্যকলাপ সম্পর্কে তিনি সম্যক অবহিত ছিলেন। তিনি তাদেরকে স্বীয় আনুগত্যের আদেশ দিয়েছেন এবং তার বিরুদ্ধাচরণ করা হতে বারণ করেছেন। সবকিছুই তাঁর ইচ্ছে ও পরিকল্পনার মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে।
আর তারই ইচ্ছে কার্যকর হয়। বান্দার কোন ইচ্ছে বাস্তবায়িত হয় না। অতএব তিনি বান্দাদের জন্য যা চান তাই হয়। আর যা চান না তা হয় না। আল্লাহ পাক যাকে ইচ্ছে তাকেই হিদায়াত, আশ্রয় ও নিরাপত্তা প্রদান করেন। এটা তার অনুগ্রহ। তিনি যাকে ইচ্ছে তাকেই অপমানিত করেন। এটা তার ন্যায় বিচার। সবকিছুই পরিবর্তিত হয়ে থাকে তাঁর ইচ্ছায় ও তাঁর অনুগ্রহ ও সুবিচারের মাধ্যমে।
তিনি কার প্রতিদ্বন্দ্বি আ সমক্ষ হওয়ার ঊর্ধ্বে। তার মীমংসায় কোন পরিবর্তন নেই। তাঁর নির্দেশ বাতিল করার কেউ নেই এবং তাঁর নির্দেশকে পরাভূত করারও কেউ নেই। উল্লেখিত সবকিছুর প্রতিই আমরা ঈমান এনেছি এবং তার প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করেছি।
পাবলিশার অর্গানাইজেশন সিয়াম হাসান নিউস লিমিটেড